যুক্তরাজ্যে সাধারণ নির্বাচনে জয়ী হয়ে পার্লামেন্টে যাচ্ছেন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ৪ নারী
যুক্তরাজ্যে সাধারণ নির্বাচনে নির্বাচিত হয়ে পার্লামেন্টে যাচ্ছেন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত চার ব্রিটিশ নারী। তারা হলেন টিউলিপ সিদ্দিক, রুশনারা আলী, ড. রূপা হক ও আপসানা বেগম। বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠিত নির্বাচনে লেবার পার্টির আটজন, কনজারভেটিভ পার্টির দুজনসহ অন্যান্য দলের মনোনয়নে এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মোট ৩৪ বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন।
টিউলিপ সিদ্দিক
বঙ্গবন্ধুর নাতনি টিউলিপ সিদ্দিক এবারের নির্বাচনে দক্ষিণ-পশ্চিম লন্ডনের হ্যাম্পস্টেড অ্যান্ড হাইগেট আসন থেকে লেবার পার্টির মনোনয়নে টানা চতুর্থবারের মতো পার্লামেন্ট সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। এর আগে ২০১৫ সালে টিউলিপ সিদ্দিক প্রথম যুক্তরাজ্যের পার্লামেন্ট সদস্য নির্বাচিত হন। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ছোট মেয়ে শেখ রেহানার মেয়ে টিউলিপ সিদ্দিক। ঢাকার স্কলাস্টিকা স্কুল, হ্যাম্পস্টেডের রয়্যাল স্কুল ও মিল হিল স্কুলে লেখাপড়া করেছেন। পরে ইউনিভার্সিটি কলেজ লন্ডন থেকে ইংরেজি সাহিত্যে স্নাতক ডিগ্রি ও কিংস কলেজ লন্ডন থেকে মাস্টার্স ডিগ্রি অর্জন করেন। এরপর ২০১১ সালে সরকার, রাজনীতি ও পলিসি বিষয়ে দ্বিতীয় মাস্টার্স ডিগ্রি অর্জন করেন।
রুশনারা আলী
বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ হিসেবে রুশনারা আলী বেথনালগ্রিন অ্যান্ড স্টেপনি আসন থেকে ১৫ হাজার ৮৯৬ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। সব মিলিয়ে তিনি টানা পাঁচবার সদস্য নির্বাচিত হলেন। রুশনারা আলী সিলেটে জন্মগ্রহণ করেন। শিশুকালে পরিবারের সঙ্গে যুক্তরাজ্যে চলে যান। অক্সফোর্ডের সেন্ট জনস কলেজ থেকে দর্শন, রাজনীতি ও অর্থনীতিতে স্নাতক করেছেন তিনি।
ড. রূপা হক
ইলিং সেন্ট্রাল অ্যান্ড অ্যাকটন আসন থেকে লেবার পার্টির মনোনয়নে পার্লামেন্ট সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন রুপা হক। টানা চতুর্থবার পার্লামেন্ট সদস্য হলেন তিনি। বাংলাদেশের পাবনা জেলার মুকসেদপুরে রুপা হকের পৈতৃক নিবাস। তার বাবা মোহাম্মদ হক ও মা রুশনারা হক। তার পরিবার যুক্তরাজ্যে পাড়ি জমায় ১৯৬২ সালে। রাজনীতিতে আসার আগে রুপা শিক্ষক ও লেখক ছিলেন। ১৯৯৮ থেকে ২০০৪ সাল পর্যন্ত ইউনিভার্সিটি অব ম্যানচেস্টার এবং ২০০৪ থেকে ইউনিভার্সিটি অব কিংস্টনে শিক্ষকতা করেন রুপা। রুপা হক ট্রিবিউন, দ্য গার্ডিয়ানসহ বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে নিয়মিত কলাম লিখতেন। তিনি ইস্ট লন্ডন ইউনিভার্সিটি থেকে যুব সংস্কৃতির ওপর ডক্টরেট ডিগ্রি অর্জন করেন।
আপসানা বেগম
লন্ডনের টাওয়ার হ্যামলেটসের পপলার অ্যান্ড লাইমহাউস আসন থেকে লেবার পার্টির মনোনয়নে দ্বিতীয়বারের মতো পার্লামেন্ট সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন আপসানা বেগম। এ আসনে তার সাবেক স্বামী এহতেশামুল হক তার ধারেকাছেও আসতে পারেননি। গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসনের প্রতিবাদে ব্রিটিশ পার্লামেন্টে সোচ্চার ভূমিকা পালন এবং গাজায় যুদ্ধবিরতির পক্ষে ভোট দিয়ে ব্যাপক আলোচনায় আসেন তিনি।আপসানার পরিবারের আদি বাড়ি বাংলাদেশের সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলায়। তবে জন্ম ও বেড়ে ওঠা লন্ডনের টাওয়ার হ্যামলেটসেই। তার বাবা টাওয়ার হ্যামলেটস কাউন্সিলের সাবেক কাউন্সিলর মনির উদ্দিন আহমেদ। রাজনীতিতে কুইনমেরি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ২০১১ সালে স্নাতক এবং ২০১২ সালে সোয়াস বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আইন ও কমিউনিটি লিডারশিপ বিষয়ে পোস্টগ্র্যাজুয়েট ডিপ্লোমা করেন তিনি।
Leave a Reply