বাংলাদেশের অবস্থা নিয়ে মন্তব্য ‘গরিব মরে অভাবে, বড়লোক মরে হুতাশে’
গরিব মরে অভাবে। আর বড়লোক মরে হুতাশে, বাংলাদেশের এখন সেই অবস্থা বলে মন্তব্য করেছেন ব্যবসায়ীদের সংগঠন এফবিসিসিআইয়ের সভাপতি জসিম উদ্দিন। অনেক উন্নত দেশের চেয়েও দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা মজবুত উল্লেখ করে তিনি বলেন, বাংলাদেশে যা রিজার্ভ আছে, সেটি ভালো। বাংলাদেশের অর্থনীতি নিয়ে অনেকে আতঙ্কের কথা বলছেন, তা অমূলক।
বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আবদুর রউফ তালুকদারের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ শেষে বৃহস্পতিবার (২৮ জুলাই) তিনি এসব কথা বলেন। এফবিসিসিআইয়ের ৯ সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
এফবিসিসিআই সভাপতি বলেন, ‘করোনা পরিস্থিতির উন্নতির পর খাদ্যপণ্য ও জ্বালানির দর বেড়ে যাওয়ার মধ্যে ইউক্রেনে রুশ হামলার পর বিশ্ব অর্থনীতি এখন টালমাটাল। এর প্রভাব পড়েছে বাংলাদেশেও। পণ্য ও জ্বালানি মূল্য পরিশোধ করতে অনেকটাই রিজার্ভ কমে গেছে ৪০ বিলিয়ন ডলারের নিচে। কয়েক মাসের মধ্যে ডলারের দাম ৮৬ টাকা থেকে বেড়ে ৯৪ টাকা ৭০ পয়সা করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। ব্যাংকগুলো বিক্রি করছে ১০৫ থেকে ১০৮ টাকায়। আর খোলাবাজারে দাম উঠেছে ১১২ টাকা।
জসিম উদ্দিন বলেন, অর্থনীতি নিয়ে যে আতঙ্ক তা অমূলক। বড় ধরনের কোনো সংকটের আশঙ্কা নেই। আমাদের রিজার্ভ ভালো আছে। অনেক উন্নত দেশ থেকে অর্থনৈতিক অবস্থা অনেক মজবুত আছে। আমরা একটি অস্থিতিশীল পরিস্থিতির মধ্যে আছি। এটা ওভারকাম করতে পারলে সবকিছু স্বাভাবিক হবে। এমন অবস্থায় সরকার ও বাংলাদেশ ব্যাংকের সহযোগিতা দরকার।
তিনি আরও বলেন, ‘বৈদেশিক মুদ্রাবাজার অস্থিরতার পেছনে যেসব ব্যবসায়ী ও ব্যাংক দায়ী তাদের খুঁজে বের করে ব্যবস্থা নিতে হবে। ‘ডলারের দাম বাড়ার কারণে এলসি খুলতে সমস্যা হয়। এ জন্য ব্যাংকগুলোকে সজাগ দৃষ্টি রাখতে হবে। ঋণ পুনঃতফসিলে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প খাত যেন সমান সুযোগ পায় সে বিষয়েও সুযোগ দিতে হবে। কারণ এফবিসিসিআই মনে করে, গ্রুপের কোনো একটি প্রতিষ্ঠানের ঋণ খেলাপি হয়ে গেলে পুরো গ্রুপ ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
এদিকে ডলারের বাজারে অস্থিরতা চলতে থাকায় ব্যাংক নির্বাহীদের সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অফ ব্যাংকার্স বাংলাদেশের (এবিবি) চেয়ারম্যান ও ব্র্যাক ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সেলিম আর এফ হোসেন বৃহস্পতিবার এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, ‘একটি গোষ্ঠীর মুনাফা হাতিয়ে নেয়ার কারণে ডলারের বাজার অস্থির হয়ে উঠেছে। কারণ সম্প্রতি খোলাবাজারে ডলারের দাম উঠেছে ১১২ টাকা। এমনকি ব্যাংকগুলোও ১০৫ থেকে ১০৮ টাকা দর রাখছে, যা কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বেঁধে দেয়া দামের চেয়ে ৯ থেকে ১৪ টাকা বেশি। এক দিনেই দাম বাড়ে ৭ টাকা, যা এর আগে কখনও দেখা যায়নি। আন্তব্যাংক মুদ্রাবাজার বর্তমানে অচল। এটাকে সচল করতে হবে। আমাদের মতো দেশে ডলারের বাজার একেবারে ফ্রি ফ্লোর করা সম্ভব না। কিছুটা ম্যানেজ করতে হবে।’
Leave a Reply