ধর্মের সঙ্গে সংস্কৃতির সংঘাত সৃষ্টি করা মোটেই সঠিক নয়
ধর্মের সঙ্গে সংস্কৃতির সংঘাত সৃষ্টি করবেন না: প্রধানমন্ত্রী
ধর্মের সঙ্গে সংস্কৃতির সংঘাত সৃষ্টি করা মোটেই সঠিক নয় বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বুধবার (১৩ এপ্রিল) দুপুরে সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয় আয়োজিত আট জেলায় নবনির্মিত শিল্পকলা ভবনের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে সরকার প্রধান একথা বলেন। প্রধানমন্ত্রী গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে নবনির্মিত ভবনগুলো উদ্বোধন করেন।
তিনি বলেন, অনেকে ধর্মের সঙ্গে সংস্কৃতির সংঘাত সৃষ্টি করতে চায় এটা মোটেই সঠিক না। ধর্ম যার যার উৎসব সবার। ধর্মের সঙ্গে সংস্কৃতির সংঘাত এটা মোটেই সঠিক না। উৎসবটা সবাই এক সঙ্গে পালন করব।
শিল্প সংস্কৃতি বিকাশে সরকারের কর্মকাণ্ড তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, শিল্পের বিকাশটা চতুর্মুখী হোক; সেটা আমরা চাই। বিভিন্ন এলাকায় বা জেলায় এলাকাভিত্তিক বিভিন্ন ধরনের সংস্কৃতি রয়েছে যেমন গান, যাত্রাপালা, কবিতা, গীতি কবিতা বিভিন্ন কিছু আছে সেগুলো যাতে বিকশিত হয় সেদিকে দৃষ্টি দেওয়া দরকার। বিশেষ করে লোক সংগীত লোক সাহিত্য যেন আরও বিকশিত হয় সেদিকে বিশেষ দৃষ্টি দেওয়া দরকার। কারণ সেগুলো আমাদের অমূল্য সম্পদ। এ সমস্ত লোকশিল্প পালাগান, কবির কবিতা যাত্রাপালা এগুলোর মধ্যে দিয়ে অনেক ঐতিহ্য জানতে পারি। এগুলো চর্চা করার সুযোগ সৃষ্টি করতে হবে।
‘যেকোনো সংকটে, আন্দোলন সংগ্রামে বা যেকোনো অর্জনে সব সময় দেখেছি কবি শিল্পী সাহ্যিত্যিকরা এগিয়ে এসেছেন, পাশে থেকেছেন। অন্তত আমি যতদিন রাজনীতিতে আছি তাই দেখেছি’- যোগ করেন প্রধানমন্ত্রী।
গণমানুষের যেকোনো আন্দোলনে আমরা তাদের পাশে পেয়েছি। তাদের লেখা গান কবিতা, নাটিকা মানুষকে উজ্জীবিত করেছে, অধিকার আদায়ের আন্দোলনকে বেগবান করেছে, শক্তিশালী করেছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা বাঙালি, আমাদের স্বকীয়তা রয়েছে, আমাদের নিজস্ব সংস্কৃতি রয়েছে সেটা যেন আরও উজ্জীবিত হয়, বিকশিত হয় সেদিকে লক্ষ্য রেখেই কাজ করতে হবে। আমাদের দেশের মানুষ সাধারণত সংস্কৃতিমনা। নৌকার মাঝিও নোৗকা চালাতে চালাতে গান ধরে। এক সময় গরুর গাড়িও চলত, ও কি গাড়িয়াল ভাই গান এখনও জনপ্রিয়, এখন গরুর গাড়ি হয়তো দেখা যায় না, কিন্তু শিল্পীর তুলিতে ঠিকই দেখা যায়। কাজেই আমাদের সংস্কৃতি চর্চা অব্যাহত রাখতে হবে। ঐতিহ্য যেমন ভুলব না আবার যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে হবে। আধুনিক যুগের সংস্কৃতির সঙ্গে যেন ছেলে মেয়েরা মিল রেখে চলতে পারে, রপ্ত করতে পারে চর্চা করতে পারে তার ব্যবস্থা করতে হবে। আধুনিক জ্ঞানও অর্জন করার দরকার আবার ঐতিহ্যকে ধারণ করে প্রযুক্তির যুগে এগিয়ে যেতে হবে।
তিনি আরও বলেন, আমাদের দেশে সব ধর্মের লোক বাস করে। মুসলিম, হিন্দু, খ্রিষ্টান বৌদ্ধ সবাই আছে। সব ধর্ম বর্ণ যেমন রয়েছে ছোট্ট ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর লোকদেরও নিজস্ব সংস্কৃতি চর্চা আছে। সেসব সংস্কৃতি যাতে বিকশতি হয় সেদিকে দৃষ্টি রেখে সংস্কৃতি চর্চার সুযোগ সৃষ্টি করেছি। ঐতিহ্য ভুলব না, সামনের দিকে এগিয়ে যাব।
বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি, ঢাকা ও কুষ্টিয়া, খুলনা, জামালপুর, নারায়ণগঞ্জ, পাবনা, মানিকগঞ্জ, মৌলভীবাজার ও রংপুর জেলা প্রশাসকের কার্যালয় প্রান্ত থেকে সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ভিডিও কনফারেন্সে গণভবনের সঙ্গে সংযুক্ত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন সাংস্কৃতি বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ, শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকী, সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. আবুল মনসুর।
Leave a Reply