ছয় শ্রেণির দলিল চূড়ান্তভাবে বাতিল করতে যাচ্ছে সরকার

অথর
কুষ্টিয়া প্রেস ডেক্স :  কুষ্টিয়া, বাংলাদেশ
প্রকাশিত :২৮ অক্টোবর ২০২৫, ২:৫৫ পূর্বাহ্ণ
ছয় শ্রেণির দলিল চূড়ান্তভাবে বাতিল করতে যাচ্ছে সরকার

■ কুষ্টিয়া প্রেস (সাহিত্য, সংস্কৃতি ও সাংবাদিকতায়) ■ ভূমি ব্যবস্থাপনাকে আরও স্বচ্ছ ও জালিয়াতিমুক্ত করার লক্ষ্যে উচ্চপর্যায়ের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ছয় শ্রেণির দলিল চূড়ান্তভাবে বাতিল করতে যাচ্ছে সরকার। 

ভূমি মন্ত্রণালয় থেকে জানা গেছে, আসন্ন জুন মাসের মধ্যেই এই বাতিলের প্রক্রিয়া সম্পন্ন হবে। এরপর আগামী জুলাই মাস থেকে সারাদেশে ডিজিটাল ভূমি জরিপ (বিডিএস) কার্যক্রম আরও জোরদার করা হবে।

সরকার মূলত এমন কিছু নির্দিষ্ট দলিলকে বাতিল করতে চাইছে, যা ভবিষ্যতে আইনি জটিলতা ও বিরোধ সৃষ্টি করতে পারে। চলমান দলিল স্ক্যানিং ও অনলাইনকরণ প্রক্রিয়ায় এসব বাতিলকৃত দলিল স্ক্যান বা ডিজিটাল ফর্মে রূপান্তর করা হবে না।
১. প্রতারণামূলক হেবা দলিল: হেবা দলিল তৈরির নির্ধারিত নিয়ম মানা হয়নি এমন দলিল, যেখানে প্রতারণা, জালিয়াতি বা অসুস্থ ব্যক্তিকে ব্যবহার করে সম্পত্তি হস্তান্তর করা হয়েছে, সেগুলো বাতিল হবে।

২. সীমালঙ্ঘনকারী ওসিয়তনামা দলিল: ইসলামী বিধানের এক-তৃতীয়াংশ সীমা লঙ্ঘন করে অথবা কোনো ওয়ারিশকে ইচ্ছাকৃতভাবে বঞ্চিত করে ওসিয়ত করা হলে সেই দলিল বাতিল বলে গণ্য হবে। তবে পূর্বের ওসিয়ত বাতিল করে পরবর্তীতে করা নতুন ওসিয়ত বৈধ থাকবে।

৩. রেজিস্ট্রেশনবিহীন দলিল: মহুরীর মাধ্যমে তৈরি হয়েছে কিন্তু আইনগতভাবে নিবন্ধন করা হয়নি, এমন সব দলিল বাতিল হিসেবে গণ্য হবে এবং ডিজিটালকরণ প্রক্রিয়ায় অন্তর্ভুক্ত হবে না।

৪. জাল দলিল: ভুয়া ও প্রতারণার মাধ্যমে তৈরি করা হয়েছে এমন সব দলিল প্রশাসনের নজরে এলে তা বাতিল করা হবে। সরকার মনে করছে, অনলাইনে যুক্ত হয়ে গেলে এই জাল দলিল বাতিল করা কঠিন হতে পারে।

৫. . ক্ষমতার অপব্যবহারে অর্জিত দলিল: রাজনৈতিক বা প্রভাব খাটিয়ে জোরপূর্বক সম্পত্তি দখল করে দলিল প্রস্তুত করা হলে, সেসব দলিলও বাতিলের আওতায় আসবে। ভুক্তভোগীরা আইনি প্রক্রিয়ায় তাদের মালিকানা ফিরিয়ে নিতে পারবেন।

৬. অংশের চেয়ে বেশি জমি বিক্রির দলিল: কোনো ওয়ারিশ যদি তার প্রকৃত প্রাপ্য অংশের চেয়ে বেশি জমি বিক্রি করে থাকেন, তবে অতিরিক্ত অংশের দলিলটি অবৈধ হিসেবে গণ্য হবে। প্রকৃত ওয়ারিশ আদালতের মাধ্যমে তার অংশ ফেরত নিতে পারবেন।

ভূমি মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, এই পদক্ষেপের মূল উদ্দেশ্য হলো জমির মালিকানায় স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা। একই সঙ্গে, জালিয়াতির শিকার হওয়া ক্ষতিগ্রস্তদের ন্যায্য অধিকার ফিরিয়ে দেওয়া এই আধুনিক ভূমি ব্যবস্থাপনার একটি গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি।

সংবাদটি শেয়ার করুন

শেয়ার করে  সঙ্গে থাকুন, আপনার অশুভ মতামতের জন্য সম্পাদক দায়ী নয়।


Leave a Reply

Your email address will not be published.