কুষ্টিয়ায় যুবদল কর্মী সবুজ হত্যাকারীদের ফাঁসির দাবীতে মানববন্ধন ও সড়ক অবরোধ, নিহতর মা ও স্ত্রীর দাবি ‘আসামীদের ফাঁসি চাই’
কুষ্টিয়া শহরের যুবদল কর্মী সবুজ হত্যাকারীদের ফাঁসির দাবীতে শহরে মানববন্ধন, বিক্ষোভ ও সড়ক অবরোধ হয়েছে। নিহতর খুনিদের গ্রেফতার ও ফাঁসির দাবীতে সোমবার (১১ নভেম্বর) শহরের আমলাপাড়া থেকে মিছিল নিয়ে বেলা ১১টায় এনএস রোডের সিঙ্গার মোড়ে এই মানববন্ধন, বিক্ষোভ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে অংশগ্রহণকারীরা সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করে।
মানববন্ধন ও বিক্ষোভে উপস্থিত ছিলেন নিহত সবুজের মা সেলিনা খাতুন, স্ত্রী রেশমা খাতুন, জেলা বিএনপির সদস্য আলামিন রানা, জেলা যুবদলের সাবেক সহ তথ্য গবেষণা সম্পাদক শরিফুল ইসলাম শরিফসহ বিএনপির নেতাকর্মীরা। এছাড়াও এ-সময় আমলাপাড়ার এলাকার কয়েক শতাধিক নারী-পুরুষ এতে অংশ নেয়।
এসময় নিহত সবুজের মা সেলিনা খাতুন বলেন, ‘আজ ছেলে হত্যার বিচার চাইতে আসছি। এটা যে কত কষ্টের তা শুধু একজন মা জানে। প্রায় চার মাস হতে চললেও আমার ছেলে সবুজ হত্যার আসামিরা গ্রেফতার হয়নি। আমার মতো আর কেউ যেন সন্তান হারা না হয়। ছেলের হত্যার সঙ্গে জড়িতদের গ্রেফতার ও কঠোর শাস্তি দেখে মরতে চাই’।
নিহত সবুজ আহমেদের স্ত্রী রেশমা খাতুন বলেন, ‘আমাদের পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি ছিল আমার স্বামী। নিরপরাধ আমার স্বামীকে দেশীয় অস্ত্র দিয়ে নির্মমভাবে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে হত্যা করে শহর যুবলীগের যুগ্ম আহবায়ক বাবুল ওরফে বান্টা বাবুলের নেতৃত্বে আওয়ামী-যুবলীগের সন্ত্রাসীরা। আমার নিরপরাধ স্বামীকে হত্যা করে সন্তানদের এতিম করেছে,আর আমাকে করেছে স্বামীহারা। এখন আমার একটাই দাবি আমার স্বামী হত্যার বিচার করতে হবে। জড়িতদের ফাঁসি দিতে হবে’।
জেলা বিএনপির সদস্য আলামিন রানা বলেন, ‘অতিদ্রুত যুবদল কর্মী সবুজ হত্যার সাথে জড়িতদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনতে হবে। তাই পুলিশ-প্রশাসন নিশ্চুপ না থেকে আসামিদের গ্রেফতারে কাজ করুন। অন্যথায় আরো কঠোর আন্দোলনেরও হুশিয়ারী দেন তিনি’।
এদিকে কর্মসূচি চলাকালে পুরো শহরজুড়ে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। পরে কুষ্টিয়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শিহাবুর রহমান শিহাব ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে আসামিদের গ্রেফতারের আশ্বাস দিলে দুই ঘণ্টা পর অবরোধ তুলে নেন আন্দোলনকারীরা।
উল্লেখ্য, গত ৫ আগষ্ট বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুখে স্বৈরাচার শেখ হাসিনা পালিয়ে গেলে সারাদেশের মতো কুষ্টিয়ায়ও আনন্দ মিছিল করে ছাত্র-জনতা। মিছিল শেষে বাড়ি ফেরার পথে শহরের আমলাপড়ায় শহর যুবলীগের সন্ত্রাসীরা সবুজসহ বেশকয়েজনের উপর ধারালো অস্ত্র দিয়ে হামলা চালায়। এতে সবুজ আহমেদ নিহত হয়। এ হামলার ঘটনায় আহত হন আরো কয়েকজন। এঘটনায় নিহতের স্ত্রী রেশমা খাতুন বাদী হয়ে ২২ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরও ১০-১২জনের বিরুদ্ধে থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
Leave a Reply