আরব আমিরাত কৃত্রিম মেঘের বৃষ্টি ঝরানোর কর্মসূচিসহ প্রাকৃতিক বৃষ্টি মোকাবিলাতেও সফল
আপামর বিশ্বের কাছে স্বপ্নপুরীসম। বিলাসে, আভিজাত্যে অতুলনীয়। সংযুক্ত আরব আমিরাতের ক্লাউড সিডিং বা কৃত্রিম মেঘ থেকে বৃষ্টি ঝরানোর এক বিশেষ কর্মসূচি রয়েছে। উড়োজাহাজ ও ড্রোনের মাধ্যমে রাসায়নিক প্রয়োগ করে মেঘ থেকে বৃষ্টি ঝরানো হয় এখানে। তবে এ প্রযুক্তি সঠিকভাবে কাজ করে কি না, তা নিয়ে সন্দেহ রয়ে গেছে। সংযুক্ত আরব আমিরাত তাদের এ পদ্ধতিটি নিয়ে গর্ব করে থাকে। তারা প্রকৃতির ওপর ছড়ি ঘোরানোর বিষয়টিকে নিজেদের ব্র্যান্ড হিসেবে পরিচয় দিয়ে থাকে।
আরব আমিরাতের অনেক নাগরিক বিশ্বাস করেন, কৃত্রিম বৃষ্টি কবে, কখন ঝরবে, সে সিদ্ধান্ত নেন দেশের রাজধানী আবু ধাবির কর্মকর্তারা। গত মাসে কৃত্রিম বৃষ্টি নিয়ে আলোচনার মধ্যেই ব্যাপক বৃষ্টির ঘটনাটি ঘটে। এতে অনেকের ঘরবাড়ি ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে বন্যার পানি ঢুকে পড়ে। সম্প্রতি দুবাই শহরের এক দুর্দশা দেখল বিশ্ববাসী। গত ১৬ এপ্রিল ভারী বৃষ্টিতে শহরটির প্রধান সড়ক বড় এক নদীর রূপ নেয়। সেখানকার বিমানবন্দর সড়কটিতে এত পানি জমে যে মনে হয়, সেখানে গাড়ি চলার পরবর্তে জাহাজ চালানো যাবে! এত বৃষ্টি কি প্রাকৃতিকভাবে ঘটল, নাকি কৃত্রিম মেঘ থেকে বৃষ্টি ঝরানো হলো, তা নিয়ে জনমনে সংশয় রয়ে গেছে।
গত মাসে দুবাই শহরে ১৪২ মিলিমিটার (৫ দশমিক ৬ ইঞ্চি) বৃষ্টি হয়। শহরটিতে বার্ষিক যে পরিমাণ বৃষ্টি হয়, তার চেয়ে একদিনেই দেড় গুণ বেশি বৃষ্টি হয়। এই বৃষ্টিতে বিমানবন্দরের রানওয়ে ডুবে গিয়েছিল। ফলে হাজার হাজার যাত্রীকে বিশ্বের ব্যস্ততম আন্তর্জাতিক এই বিমানবন্দরে আটকা পড়তে হয়। কয়েক দিন ধরে পানি সড়কে থাকায় রাস্তায় গাড়ি চলতে পারেনি। দুবাইয়ের মতো সংযুক্ত আরব আমিরাতের অন্যান্য শহরের পরিস্থিতিও একই রকম দাঁড়ায়। বাড়ি ফিরতে না পেরে অনেক কর্মী ও ক্রেতাকে শপিং মলের মেঝেতেই ঘুমাতে হয়েছে।
দুবাইয়ের মতো শহর ১০০ বছরে একবার এ ধরনের পরিস্থিতিতে পড়তে পারে, এতে আশ্চর্য হওয়ার কিছু নেই। তবে আশ্চর্যের বিষয় দুবাই শহরটি ঠিকঠাক পরিচ্ছন্ন রাখা হয়। কিন্তু বন্যা পরিস্থিতির পর কী ঘটেছে, তা স্পষ্টভাবে তুলে ধরা হয়নি। দুবাই স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ ২৪ এপ্রিল জানায়, পরিস্থিতি স্বাভাবিক। কারও অসুস্থতার কোনো খবর পাওয়া যায়নি। সংযুক্ত আরব আমিরাত অবকাঠামো, স্বাস্থ্যসেবা ও ই-গভর্নমেন্টের দিক থেকে বৈশ্বিক র্যাংকিংয়ে ভালো অবস্থানে রয়েছে।
Leave a Reply