সুন্নী মতাদর্শ ভিত্তিক তিনটি রাজনৈতিক দলের সমন্বয়ে ”বৃহত্তর সুন্নী জোট” এর সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত
■ কুষ্টিয়া প্রেস (সাহিত্য, সংস্কৃতি ও সাংবাদিকতায়) ■ ”বৃহত্তর সুন্নী জোট” এর চট্টগ্রাম জেলার উদ্যোগে জোট ঘোষিত ১৩ দফা বাস্তবায়নের দাবীতে ১৫ নভেম্বর ঐতিহাসিক লালদীঘি ময়দানে অনুষ্ঠেয় জনসভা উপলক্ষে
সংবাদ সম্মেলন
সুন্নী মতাদর্শ ভিত্তিক তিনটি রাজনৈতিক দলের সমন্বয়ে গঠিত বৃহত্তর সুন্নী জোট – চট্টগ্রাম জেলার উদ্যোগে জোট ঘোষিত ১৩ দফা বাস্তবায়নের দাবিতে ১৫ নভেম্বর শনিবার দুপুর ২টায় ঐতিহাসিক লালদীঘি ময়দানে অনুষ্ঠেয় জনসভা উপলক্ষে আজকের সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত সম্মানিত নেতৃবৃন্দ, প্রিন্ট, ইলেকট্রনিক ও অনলাইন মিডিয়ার প্রিয় সাংবাদিক বন্ধুরা, আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ।
আপনারা জাতির বিবেক। এদেশের সকল গৌরবোজ্জ্বল অর্জনে আপনাদের সাহসী ভূমিকা আমরা শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করছি। স্বাধীনতার পর থেকে আপনারা পেশাগত দায়িত্ব পালনে কখনো ঝুঁকিমুক্ত ছিলেন না, এখনো নেই। শত ব্যস্ততার মধ্যেও আমাদের ডাকে সাড়া দিয়ে এ সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত হবার জন্য আমরা জোটের পক্ষ থেকে আপনাদেরকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি এবং বৃহত্তর সুন্নী জোটের পূর্ণাঙ্গ বক্তব্য মিডিয়ায় প্রচার করে জাতির সামনে তুলে ধরার জন্য আপনাদের একান্ত সহযোগিতা কামনা করছি।
প্রিয় সাংবাদিক বন্ধুরা,
জুলাই আন্দোলনে (২০২৪) ক্ষমতার পট পরির্বতনের পর গঠিত অন্তর্বর্তী সরকারের নিকট রাষ্ট্রীয় সার্বিক ব্যবস্থাপনা, সংস্কার, আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা, ন্যায়বিচার ও নির্বাচনী ব্যবস্থা সংস্কারের প্রত্যাশা অনেক উঁচুতে থাকলেও আজ অর্থনৈতিক দুরাবস্থা, মব ভায়োলেন্স, মসজিদ-মাজারে আক্রমণ, বেকারত্ব বৃদ্ধি পাওয়া ও সামাজিক অস্থিরতার কারণে জনগণ হতাশ হয়েছে। সামনে ২০২৬ এর ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষিত হওয়ায় জনগন একটি অবাধ নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের প্রত্যাশায় আশান্বিত হয়েছিল। কারণ- পতিত সরকারের অধীনে জনগন তিনটি জাতীয় নির্বাচনে পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিতে ভোট কেন্দ্রে যেতে পারেনি। কাঙ্খিত রোডম্যাপ ঘোষণার পর থেকে রাজনীতির মাঠে দলগুলোর মধ্যে নির্বাচন কেন্দ্রীক ঐক্যমত্যের পরিবর্তে বিদ্যমান সাংবিধানিক নির্বাচনী ব্যবস্থা পি. আর. পদ্ধতি, গনভোটসহ নানা প্রশ্নে চরম বিভক্তি স্পষ্ট হয়ে উঠেছে।
প্রিয় সাংবাদিক বন্ধুরা,
অন্তবর্তীকালীন সরকারের ১৫ মাসে মব ভায়োলেন্সের মাধ্যমে আতংক সৃষ্টি করে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে হত্যা করা, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষকদের, মসজিদে ইমামদের হেনস্তা ও পদত্যাগে বাধ্য করা, কবর থেকে লাশ তুলে পুড়িয়ে উল্লাস করা, শতশত মাজার, মসজিদ ও মাদ্রাসায় হামলা, অগ্নিসংযোগ ও প্রকাশ্যে লুটপাটের ঘটনায় প্রশাসনের নির্লিপ্ততা জাতি গভীর উদ্বেগের সাথে প্রত্যক্ষ করেছে। সার্বিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতি আরো উদ্বেগজনক, গত ১৫ মাসে নতুন করে ১ লক্ষ ৬০ হাজার উচ্চ শিক্ষিত যুবক-যুবতী বেকার হয়েছে। ৩৫৩ টি শিল্প কারখানা বন্ধের কারনে বেকার হয়ে ১ লক্ষ ২০ হাজার শ্রমিক মানবেতর জীবন কাটাচ্ছে, বাংলাদেশ ব্যাংকের রিপোর্ট মতে গত চার মাসে ৭.৩৫ বিলিয়ন ডলার বৈদেশিক ব্যয় বৃদ্ধি পেয়েছে।
কর্মসংস্থান সৃষ্টির পরিবর্তে চলছে ছাটায়ের খড়গ, সকল কারখানায় উৎপাদন কমে যাওয়ায় আমদানী-রপ্তানী থমকে যাচ্ছে। দেশ পরিচালনায় বাড়ছে ঋণের বোঝা, বাড়তি মূল্যস্ফীতি দারিদ্র জনগোষ্ঠির পেটে আঘাত করছে। তদুপরি মামলা বাণিজ্য, নিয়োগ বাণিজ্য, স্বজনপ্রীতি, লুটপাট ও আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির ক্রমাবনতির মধ্যে ও ঘোষিত রোডম্যাপ অনুযায়ী একটি অবাধ শান্তিপূর্ণ অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের মাধ্যমে নির্বাচিত সরকারের প্রত্যাশা করেছিল শান্তিপ্রিয় জনগণ। কিন্তু জুলাই সনদ নিয়ে রাজনৈতিক অংশিজনদের মধ্যে বিভাজন ও নানাবিতর্ক সৃষ্টির মাধ্যমে একটি পাতানো নির্বাচনের শংকায় শংকিত জনগন। অতএব সার্বিক রাষ্ট্রীয় অব্যবস্থাপনা ও অনিশ্চয়তার বৃত্ত থেকে জাতিকে উদ্ধারের লক্ষ্যে একটি অবাধ, সুষ্ঠ শান্তিপূর্ণ অংশগ্রহণমূলক সর্বজন গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের ভিত্তি রচনার জন্যই বৃহত্তর সুন্নী জোট এর পক্ষ থেকে ১৩ দফা বাস্তবায়নের দাবীতে ১৫ নভেম্বর শনিবার বিকেল ২টায় ঐতিহাসিক লালদীঘি ময়দানে জনসভার আয়োজন করা হয়েছে । আমরা চাই জাতির বিভাজন দূর করে নির্বাচনে নির্ভয়ে নিঃসংশয়ে জনরায়ের প্রতিফলন হোক।
এলক্ষ্যে বৃহত্তর সুন্নী জোট গৃহীত ১৩ দফা নিম্নে তুলে ধরা হলো
* নির্বাচন কমিশন ঘোষিত সময়ে জাতীয় নির্বাচন করা।
* জাতীয় নির্বাচনের দিনে গণভোটের আয়োজন করা।
* রাষ্ট্রীয় সংলাপে সকল নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের উপস্থিতি নিশ্চিত করা।
* নির্বাচনের আগে সকল অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারে অভিযান পরিচালনা করা।
* দুর্নীতিবাজ, কালো টাকার মালিক ও দণ্ডিতদের নির্বাচনে অযোগ্য ঘোষণা করা।
* জুলাই বিপ্লব ও পরবর্তী সময়ে সংগঠিত সব হত্যাকাণ্ডের বিচার নিশ্চিত করা।
* পার্বত্য জেলায় বিদেশি মদদপুষ্ট সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ গ্রহণ করা।
* চট্টগ্রাম বন্দরের টার্মিনাল বিদেশিদের হাতে তুলে দেয়ার সিদ্ধান্ত বাতিল করা।
* আরাকান আর্মিকে করিডোর না দেয়া।
* মাজার মসজিদে হামলাকারীদের বিচার ও মাজার, খানকা, দরবার শরীফ ও ধর্মীয় নেতাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা।
* মুক্তিযোদ্ধাদের মর্যাদা রক্ষা ও স্বাধীনতার ইতিহাস সংরক্ষণ করা।
* গণ-মাধ্যমের স্বাধীনতা ও সাংবাদিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা।
* নির্বাচনকালীন সময়ে দল নিরপেক্ষ প্রশাসনিক ব্যবস্থা নিশ্চিত করা।
প্রিয় সাংবাদিক বন্ধুরা,
শত ব্যস্থতার মধ্যেও আমাদের ডাকে সাড়া দিয়ে আমাদের বক্তব্য শুনেছেন সে জন্য পুনরায় আপনাদেরকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি।
স্থান:এস রহমান হল, চট্টগ্রাম প্রেসক্লাব, জামালখান।
সালামান্তে
মুহাম্মদ আব্দুন নবী আল কাদেরি
আহবায়ক – জনসভা প্রস্তুতি কমিটি
মুহাম্মদ জসিম উদ্দিন ভুইয়া
সদস্য সচিব
জনসভা প্রস্তুতি কমিটি
বৃহত্তর সুন্নী জোট চট্টগ্রাম জেলা।

























Leave a Reply