কুষ্টিয়ায় দুটি পৃথক হত্যায় হানিফ-আতাসহ আওয়ামী লীগ নেতাদের বিরুদ্ধে মামলা
কুষ্টিয়ায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে দুজন নিহতের ঘটনায় দুটি পৃথক হত্যা মামলা হয়েছে। আন্দোলনের সময়ে পুলিশের সঙ্গে ছাত্র জনতার সংঘর্ষে নিহত দুজনের পরিবারের পক্ষ থেকে এ দুটি মামলা দায়ের করা হয়। শুক্রবার কুষ্টিয়া মডেল থানায় করা এ দুটি মামলায় মাহবুব উল আলম হানিফসহ কুষ্টিয়া জেলা আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের শীর্ষ নেতাদের আসামি করা হয়েছে। মাহবুব উল আলম হানিফকে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও কুষ্টিয়া-৩ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে শুরু হওয়া আন্দোলনের সময় ৫ আগস্ট প্রাণ হারায় শিশু আবদুল্লাহ (১৩)। তার বাবা কুষ্টিয়া শহরের চর থানাপাড়ার বাসিন্দা লোকমান হোসেন একটি মামলা করেন। একই সময়ে প্রাণ হারান সদর উপজেলার হাটশ হরিপুর ইউনিয়নের শালদহ গ্রামের মৃত নওশের আলীর ছেলে স্বর্ণকার বাবু (৪২)। এ ঘটনায় আরেকটি মামলা দায়ের করেছেন শহরের কালিশংকরপুর এলাকার বাসিন্দা রাইসুল ইসলাম।
প্রথম মামলাটিতে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ, তার চাচাতো ভাই শহর আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ও সদর উপজেলা চেয়ারম্যান আতাউর রহমান আতাসহ আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের ১৪ জনকে আসামি করা হয়েছে। মামলায় আরও ১০-২০ জন অজ্ঞাত পরিচয় ব্যক্তিকে আসামি করা হয়েছে।
অপর মামলাটিতে শহর আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক আতাউর রহমান আতা, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সদর উদ্দিন খান, সাধারণ সম্পাদক আজগর আলী, সহ-সভাপতি রবিউল ইসলাম ও অ্যাডভোকেট অনুপ কুমার নন্দী, জেলা যুবলীগ সভাপতি রবিউল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক জিয়াউল আলম স্বপন, জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি ইয়াসির আরাফাত তুষার, সাধারণ সম্পাদক মানব চাকি, জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আতিকুর রহমান অনিক, সাধারণ সম্পাদক শেখ হাফিজ চ্যালেঞ্জসহ ৩৫ জন নেতা কর্মীকে আসামি করা হয়েছে। এছাড়া অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে আরও ৪০-৪৫ জনকে।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ডাকে জুলাইয়ের প্রথম থেকেই শুরু হয় আন্দোলন। আন্দোলন সহিংস রূপ নেয় মাসের মাঝামাঝিতে। এরপর ৫ আগস্ট কুষ্টিয়া শহরে পুলিশের সঙ্গে ছাত্র জনতার সংঘর্ষে শিশু আব্দুল্লাহ ও স্বর্ণকার বাবুসহ নিহত হন ৮ জন। এছাড়া সেদিন রাতে আওয়ামী লীগের সঙ্গে সংঘর্ষে নিহত হন বিএনপি কর্মী সবুজ।
কুষ্টিয়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মাহফুজুল হক চৌধুরী মামলা দুটির বিষয় নিশ্চিত করেছেন। তবে মামলার কোনো আসামি গ্রেপ্তার হয়নি বলে তিনি জানান।
Leave a Reply