মৃত্যুর আগেই জীবিত থাকালীন নিজের চল্লিশার আয়োজন বৃদ্ধর, অংশ নিলেন গ্রামবাসী
মৃত্যুর আগেই জীবিত থাকা অবস্থায় নিজের চল্লিশার আয়োজন করে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছেন ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলায় মারফত আলী (৭০) নামের এক বৃদ্ধ। সোমবার (১ জুলাই) ওই উপজেলার বড়হিত ইউনিয়নের রাজেন্দ্রপুর গ্রামে এ পাঁচ শতাধিক মানুষ নিয়ে এ মেজবানের আয়োজন করেন তিনি।
অনুষ্ঠানে মেহমানদের খাবারের জন্য এক লাখ ১৫ হাজার টাকার একটি গরু, ২০ হাজার টাকার খাসি, মুরগি, মাছ ছাড়াও খাওয়ানো হয়েছে পায়েস। অনুষ্ঠানে কমপক্ষে ৫/৬ শত নারী-পুরুষকে খাওয়ানো হয়।
প্রথা চালু আছে যে, কেউ মারা গেলে চল্লিশ দিন পরে জানাজায় শরীক হওয়া মুসল্লি ও দরিদ্র অসহায় আত্মীয়স্বজনদের দাওয়াত করে ডালভাত খাওয়ার ব্যবস্থা করেন কেউ কেউ। এ আয়োজন চল্লিশা নামে পরিচিত।
স্থানীয়রা জানান, মারফত আলীর দুই সংসারে রয়েছে ৩ মেয়ে ও ৬ ছেলে। এলাকায় বিত্তশালী কৃষক হিসেবে পরিচিত তিনি। পরিবারের সদস্যদের সম্মতিতে আয়োজন করা হয় চল্লিশা। এ জন্য তিনি কয়েকদিন হাতে সময় নিয়ে গত এক সপ্তাহ ধরে গ্রামের লোকজনকে দাওয়াত দেন।
মারফত আলীর বড় ছেলে ফারুক মিয়া বলেন, বাবার ইচ্ছা তিনি জীবিত থেকেই এ মেহমানদারি করবেন। এতে আমাদেরও সম্মতি ছিল। তবে বাবা না থাকলেও বাবার আত্মার শান্তির জন্য এটা করতাম।
ছোট ছেলে সুজন মিয়া বলেন, বাবার একটা সন্দেহ দূর করতেই এ আয়োজনে সবার সম্মতি ছিল। এতে আমাদেরও ভালো লাগছে।
মারফত আলী বলেন, বর্তমানে শারীরিকভাবে দুর্বল হয়ে পড়ছি। ইবাদত ছাড়া এখন তেমন কোনো কাজকর্ম করি না। মেয়েদের বিয়ে দিয়েছি। ছেলেরা কেউ বিয়ে করে আলাদা আবার কেউবা লেখাপড়া করছেন। যার যার মতোই ব্যস্ত থাকে। এ অবস্থায় চিন্তাভাবনা করছি নিজের জমিজমা ভাগ-বাটোয়ারা করে দিয়ে দেব।
তিনি বলেন, এরপর পরপারে চলে যাওয়ার অপেক্ষা। এর মধ্যে মাথায় আসে মারা গেলে সন্তানরা যদি চল্লিশা না করে। এ জন্য নিজ সিদ্ধান্তেই নিজের চল্লিশা জীবিত অবস্থাতেই করেছি।
Leave a Reply