ধর্মীয় ও বিজ্ঞানের দৃষ্টিতে রহস্যময় সূর্য ও চন্দ্র গ্রহণ
পৃথিবীতে আমাবস্যা সাথে রেখে সূর্যগ্রহণ হয়। আর এর সাথে সাগরের জোয়ার, বাতাসের তীব্রতা ও বৃষ্টির সম্পর্ক রয়েছে। তাইতো পৃথিবীতে প্রাকৃতিক পরিবর্তনের লক্ষণও দেখা মেলে।
ধর্মীয় দৃষ্টিতে, সুর্যগ্রহন যেমন বাহিরে স্পষ্ট-অস্পষ্ট দেখা বা বোঝা যায় তেমনি গভীরতায় দেহ ও মনের ভিতরেও রহস্য রহিয়াছে। মহান আল্লাহ (সৃষ্টিকর্তা) আমাদের সব রকম বিপদ থেকে হেফাজত করেন অতঃপর হুশিয়ার করেন। সুর্যগ্রহণ আমাদের অনেক কিছুর সংকেত দিয়ে থাকে, যা জ্ঞানীরা উপলব্ধি করে থাকেন। সুর্যগ্রহণ ও চন্দ্রগ্রহণ হলো আল্লাহর সৃষ্টির একটি নিদর্শন চিহ্ন। সূর্য ও চন্দ্র আল্লাহর মাখলুক তথা সৃষ্টবস্তু এবং এর প্রমাণস্বরূপই মহান সৃষ্টিকর্তা এ দুটোর ওপর ‘গ্রহণ’ প্রদান করেন। ‘গ্রহণ’ সূর্য ও চন্দ্রের ওপর প্রযোজ্য আল্লাহর কুদরতের আলামত বা নিদর্শন বৈ অন্য কিছুই নয়। এটি মহান আল্লাহর পক্ষ থেকে একটি সতর্কবার্তাও বটে। আল্লাহ তায়ালা মহা সৃষ্টিজগতেও সূর্য বা চন্দ্রগ্রহণের নিদর্শনের মাধ্যমে চাক্ষুষ দৃশ্যমান করেছেন অতঃপর এতে সত্য অনুসন্ধানকারীরা আল্লাহ নৈকট্য অর্জনকারী মুমিন ও মুত্তাকীনের সাথে দাখিল বা বায়েত গ্রহণ করার ফরজ আদেশ দিয়েছেন অতঃপর আল্লাহর আওলিয়াগনের সাথে এক কাতারে থেকে সালাত প্রতিষ্ঠিত করা। এছাড়াও মুমিন ও মুত্তাকীনগণ আল্লাহ সাথে দিদারে ও তাঁদের পথপ্রদর্শকের দর্শনে, সংস্পর্শে বা সোহবতে থেকে নিয়তি সময় প্রতিষ্ঠিত করেছেন। গ্রহণের সময় সবাই যেন মহান আল্লাহর তাসবিহ পাঠ, পেয়ারা হাবিব নবী করীম সঃ প্রতি দরুদ পাঠে সংযোগ, দোয়া, সালাত আদায় করে। যতদিন সূর্য ও চন্দ্র গ্রহণ থাকবে ততদিন মহাজগত সংসার টিকে থাকবে, তদরুপ বাসযোগ্য গ্রহে আল্লাহর মনোনিত মুমিন ও মুত্তাকীন তথা ওলি-আউলিয়া থাকবে পৃথিবীও নিদিষ্ট সুশৃঙ্খল গতিতে চলবে।
আমরা সত্যকে ধরে রাখি, অনুমান বা আন্দাজে পথ না চলি। আল্লাহর ওলি আউলিয়ার সাথে থাকি অতঃপর ছবকের মধ্য দিয়ে আল্লাহর নৈকট্য পাওয়ায় মূল বিষয় বুঝি। মহান পালনকর্তা আমাদেরকে এই মানবকূলে এসে একজন আল্লাহর মুমিন উপাধি প্রাপ্ত মহান ব্যক্তির সহবতে থেকে এসব গভীর জ্ঞান নেওয়ার তৌফিক দান করুক। ইবলিস আদমকে সন্মান করেন নাই বলে আমরা শ্রেষ্ঠ হয়ে পথপ্রদর্শকে মানবো না তা মোটেই কাম্য নয়।
সূর্যগ্রহণ না হওয়াটাও পৃথিবী ধ্বংস হয়ে যাওয়ার একটি মাধ্যম। রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সূর্যগ্রহণের পুরো সময়টিতে সালাত পড়তেন। সে কারণেই সূর্যগ্রহণের সময় নামাজ ও করণীয় সম্পর্কে অবলম্বন করা খুবই জরুরি।
বিজ্ঞানের দৃষ্টিতে, চাঁদ যখন পরিভ্রমণরত অবস্থায় কিছু সময়ের জন্য পৃথিবী ও সূর্যের মাঝখানে এসে পড়ে, ঠিক তখনই পৃথিবীর কোনো দর্শকের কাছে সূর্য আংশিক বা সম্পূর্ণরূপে অদৃশ্য হয়ে যায় (কিছু সময়ের জন্য)। এই ঘটনাকে সূর্যগ্রহণ বলা হয়। আবার পৃথিবী যখন চাঁদ ও সূর্যের মধ্যে আসে তখন পৃথিবীর আড়ালে চাঁদ ঢাকা পড়ে এবং চন্দ্রগ্রহণ হয়। আমাবশ্যার ও পূণিমা তে এমন ঘটনা ঘটে থাকে। পৃথিবীতে প্রতি বছর অন্তত দুই থেকে পাচঁটি সূর্যগ্রহণ পরিলক্ষিত হয়। এর মধ্যে শূন্য থেকে দুইটি সূর্যগ্রহণ পূর্ণ সূর্যগ্রহণ হয়।
Leave a Reply