পঞ্চমবার প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিলেন শেখ হাসিনা, সঙ্গী হচ্ছেন ২৫ মন্ত্রী ও ১১ প্রতিমন্ত্রী

অথর
নূর মোহাম্মদ রবিউল  কুষ্টিয়া, বাংলাদেশ
প্রকাশিত :১১ জানুয়ারি ২০২৪, ২:২০ অপরাহ্ণ
পঞ্চমবার প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিলেন শেখ হাসিনা, সঙ্গী হচ্ছেন ২৫ মন্ত্রী ও ১১ প্রতিমন্ত্রী

সব মিলিয়ে পঞ্চমবার দেশের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিলেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। বৃহস্পতিবার (১১ জানুয়ারি) সন্ধ্যা ৭টা ৩ মিনিটে রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন বঙ্গভবনের দরবার হলে তাকে শপথ বাক্য পাঠ করান। সংবিধানের ৫৬ অনুচ্ছেদের ৩ ধারা অনুযায়ী প্রধানমন্ত্রী এ শপথ নেন।

শপথ অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. মাহবুব হোসেন। অনুষ্ঠানে স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী, প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানসহ বিশিষ্টজনরা উপস্থিত ছিলেন। পঞ্চম মেয়াদে রাষ্ট্র পরিচালনায় এবার শেখ হাসিনার সঙ্গী হচ্ছেন ২৫ মন্ত্রী ও ১১ প্রতিমন্ত্রী।তাঁরাও সবাই আজ শপথ নিয়েছেন। প্রথমে শপথ নেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তারপর মন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রীরা শপথ নেন। শপথ গ্রহণের পর প্রধানমন্ত্রী, মন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রীদের দপ্তর বণ্টন করে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। প্রধানমন্ত্রীর অধীনে ৬ মন্ত্রণালয়-বিভাগ রয়েছে। যা মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়, সশস্ত্র বাহিনী বিভাগ; বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়, সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয় এবং শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় প্রধানমন্ত্রী নিজের কাছে রেখেছেন।
শপথ নেওয়া মন্ত্রীরা যে দপ্তর পেলেন:-
১. আ ক ম মোজাম্মেল হক- মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়
২. ওবায়দুল কাদের- সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়
৩. নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন- শিল্প মন্ত্রণালয়
৪. আসাদুজ্জামান খান- স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়
৫. দীপু মনি- সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়
৬. মো. তাজুল ইসলাম- স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়
৭. আনিসুল হক- আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়
৮. মোহাম্মদ হাছান মাহমুদ- পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়
৯. সাধন চন্দ্র মজুমদার- খাদ্য মন্ত্রণালয়
১০. ফরহাদ হোসেন- জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়
১১. ফরিদুল হক খান- ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়
১২. মহিবুল হাসান চৌধুরী- শিক্ষা মন্ত্রণালয়
১৩. স্থপতি ইয়াফেস ওসমান- বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়
১৪. মুহাম্মদ ফারুক খান- বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়
১৫. আবুল হাসান মাহমুদ আলী- অর্থ মন্ত্রণালয়
১৬. মো. আব্দুস শহীদ- কৃষি মন্ত্রণালয়
১৭. র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী- গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়
১৮. মো. আব্দুর রহমান- মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়
১৯. নারায়ণ চন্দ্র চন্দ- ভূমি মন্ত্রণালয়
২০. আব্দুস সালাম- পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়
২১. মো. জিল্লুল হাকিম- রেলপথ মন্ত্রণালয়
২২. সাবের হোসেন চৌধুরী- পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়
২৩. জাহাঙ্গীর কবির নানক- বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়
২৪. নাজমুল হাসান- যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়
২৫. সামন্ত লাল সেন- স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়।

শপথ নেওয়া প্রতিমন্ত্রীরা যে দপ্তর পেলেন:-
১. নসরুল হামিদ- বিদ্যুৎ বিভাগ
২. জুনাইদ আহমেদ পলক- ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়
৩. খালিদ মাহমুদ চৌধুরী- নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়
৪. জাহিদ ফারুক- পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়
৫. সিমিন হোসেন (রিমি)- মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়
৬. মোহাম্মদ আলী আরাফাত- তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়
৭. মো. মহিববুর রহমান- দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়
৮. কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা- পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়
৯. রুমানা আলী- প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়
১০. শফিকুর রহমান চৌধুরী- পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়
১১. আহসানুল ইসলাম (টিটু)- বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
সংবিধানের ৫৬ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, মন্ত্রিসভায় একজন প্রধানমন্ত্রী থাকবেন এবং প্রধানমন্ত্রীর ইচ্ছা অনুযায়ী মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী ও উপমন্ত্রীরা থাকবেন। প্রধানমন্ত্রী ও অন্যান্য মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী ও উপমন্ত্রীদের রাষ্ট্রপতি নিয়োগ দিয়ে থাকেন।
এর আগে বুধবার (১০ জানুয়ারি) সকালে শপথ নিয়েছেন নতুন নির্বাচিত সংসদ সদস্যরা। শপথ শেষে অনুষ্ঠিত সংসদীয় দলের সভায় শেখ হাসিনাকে সংসদ নেতা নির্বাচিত করা হয়। এরপর এদিন সন্ধ্যার পর বঙ্গভবনে যান আওয়ামী লীগ সভানেত্রী। সেখানে রাষ্ট্রপতি তাকে প্রধানমন্ত্রী নিয়োগের সিদ্ধান্ত দেন। একই সঙ্গে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে নতুন মন্ত্রিসভা গঠনে সম্মতি দেন রাষ্ট্রপতি।

গত ৭ জানুয়ারি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোটগ্রহণ হয়। বিএনপিবিহীন এ নির্বাচনে নিরঙ্কুশ জয় পায় আওয়ামী লীগ। ২৯৯টি আসনের মধ্যে ২৯৮টি আসনের ফলাফল পাওয়া গেছে। এর মধ্যে ২২২টিতে জয় পেয়েছে আওয়ামী লীগ। জাতীয় পার্টি জয় পেয়েছে ১১ আসনে। এছাড়া বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ) ও বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টি একটি করে আসনে জয় পেয়েছে। আর বাকি আসনগুলো স্বতন্ত্র প্রার্থী জয় লাভ করেন।

এদিকে ২০২৯ সালে পঞ্চম মেয়াদ পূর্ণ হলে শেখ হাসিনা স্বাধীন দেশে ২৫ বছর প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করবেন। এছাড়াও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা প্রথম ১৯৮৬ সালে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। এরপর ১৯৯১, ১৯৯৬, ২০০১, ২০০৮, ২০১৪, ২০১৮ এবং সর্বশেষ ২০২৪ সালের নির্বাচনে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।

সংবাদটি শেয়ার করুন

শেয়ার করে  সঙ্গে থাকুন, আপনার অশুভ মতামতের জন্য সম্পাদক দায়ী নয়।


Leave a Reply

Your email address will not be published.