আজ জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী দিবস: জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে বাংলাদেশ একটি বড় অংশীদার

অথর
কুষ্টিয়া প্রেস ডেক্স :  কুষ্টিয়া, বাংলাদেশ
প্রকাশিত :২৯ মে ২০২৩, ৬:৪১ পূর্বাহ্ণ
আজ জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী দিবস: জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে বাংলাদেশ একটি বড় অংশীদার

জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে বাংলাদেশ একটি বড় অংশীদার। ‘ব্লু-হেলমেট’র অধীনে বিশ্বের বিভিন্ন বিরোধপূর্ণ দেশে শান্তি ও নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠায় বাংলাদেশ কাজ করে যাচ্ছে। ১৯৮৮ সালে সেনাবাহিনীর ১৫ সদস্যের একটি পর্যবেক্ষক দল ইরাক-ইরান শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে যোগদানের মাধ্যমে জাতিসংঘের পতাকাতলে শান্তিরক্ষা মিশনে কাজ শুরু করে বাংলাদেশ। এক বছর পর ১৯৮৯ সালে বাংলাদেশ পুলিশ নামিবিয়ায় জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে যোগ দেয়। ১৯৯৩ সালে বাংলাদেশ নৌবাহিনী মোজাম্বিক ও বাংলাদেশ বিমান বাহিনী বসনিয়া-হার্জেগোভিনায় জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রম শুরু করে। এরপর থেকে বিগত ৩৫ বছর ধরে শান্তিরক্ষা মিশনে সুনামের সঙ্গে কাজ করে আসছে সশস্ত্র বাহিনী ও বাংলাদেশ পুলিশ।

সশস্ত্র বাহিনীর জনসংযোগ বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে ১২৫টি দেশের ৮৭ হাজারের বেশি শান্তিরক্ষী ১২টি অপারেশনে দায়িত্ব পালন করছেন। এরমধ্যে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে সর্বোচ্চ শান্তিরক্ষী প্রেরণকারী দেশ হচ্ছে বাংলাদেশ। বিশ্বশান্তি প্রতিষ্ঠায় এ পর্যন্ত বিশ্বের ৪০টি দেশে ৬৩টি মিশনে এক লাখ ৮৮ হাজার ৫৫৮ জন বাংলাদেশি শান্তিরক্ষী সদস্য অংশগ্রহণ করেছে। বর্তমানে বিশ্বের ১৪টি দেশে সাত হাজার ৪৩৬ জন সদস্য শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে নিয়োজিত রয়েছেন। পাশাপাশি বিশ্বশান্তি প্রতিষ্ঠায় বাংলাদেশের নারী শান্তিরক্ষীদের অংশগ্রহণও ব্যাপকভাবে প্রশংসিত হয়েছে। ইতোমধ্যে দুই হাজার ৭২৮ জন নারী শান্তিরক্ষী সদস্য সাফল্যের সঙ্গে তাদের দায়িত্ব সম্পন্ন করেছেন। বর্তমানে ৫৭২ জন নারী সদস্য শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে কর্মরত রয়েছেন। এছাড়া মিশন এলাকায় সংঘাতপূর্ণ ও প্রতিকূল পরিস্থিতিতে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে এ পর্যন্ত ১৬৭ জন বাংলাদেশি বীর সন্তান নিজেদের জীবন উৎসর্গ করেছেন। ২৫৯ জন শান্তিরক্ষী সদস্য আহত হয়েছেন। চলতি বছর (২০২৩) ৫ জন শহীদ শান্তিরক্ষীর পরিবার এবং ৫ জন আহত শান্তিরক্ষীকে সম্মাননা প্রদান করা হচ্ছে।
আন্তর্জাতিক জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী দিবস আজ। বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো সোমবার (২৯ মে) বাংলাদেশেও যথাযোগ্য মর্যাদায় দিবসটি পালন করা হচ্ছে। জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে অংশগ্রহণকারী বিশ্বের সব দেশের শান্তিরক্ষীদের অসামান্য অবদানকে এই দিনে গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করা হয়।
হাইতি থেকে পূর্ব তিমুর, লেবানন থেকে কঙ্গো পর্যন্ত বিশ্বের বিভিন্ন সংঘাতপূর্ণ এলাকায় বাংলাদেশের শান্তিরক্ষীরা কাজ করেছেন। বসনিয়ার তীব্র শীত, সাহারা মরুভূমির দুঃসহ গরম ও পূর্ব এশিয়ার ক্লান্তিকর আর্দ্রতার সঙ্গে মানিয়ে কাজ করে যাচ্ছেন বাংলাদেশের শান্তিরক্ষীরা। ধর্ম, গোত্র, বর্ণ, রাজনৈতিক মতাদর্শ ও আঞ্চলিক বৈষম্যকে পেছনে ফেলে বাংলাদেশের শান্তিরক্ষী সদস্যরা নিজেদের উৎসর্গ করেছেন বিশ্ব মানবতার সেবায়। পেশাগত দক্ষতা, নিরপেক্ষতা, সততা ও মানবিকতার কারণে বাংলাদেশের শান্তিরক্ষী সদস্যরা বিশ্বের সব মানুষের কাছে আজ অনন্য দৃষ্টান্ত।

পুলিশ সদর দফতর সূত্র জানায়, জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে বাংলাদেশ পুলিশ ১৯৮৯ সাল থেকে নামিবিয়া মিশনের মধ্য দিয়ে যাত্রা শুরু করে। এরপর থেকে এ পর্যন্ত পুলিশের ২১ হাজার ২৮৪ জন শান্তিরক্ষী ২১টি দেশের ২৩টি মিশনে পেশাদারিত্বের সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেছেন। বর্তমানে ডেমোক্রেটিক রিপাবলিক অব কঙ্গো, মালি, সাইপ্রাস, সাউথ সুদান, সেন্ট্রাল আফ্রিকা, লিবিয়া ও সুদানসহ সাতটি দেশে বাংলাদেশ পুলিশের ৫১২ জন শান্তিরক্ষী নিয়োজিত রয়েছেন। ২০০০ সাল থেকে বাংলাদেশ পুলিশের নারী পুলিশ কর্মকর্তারা জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করছেন। বর্তমানে পুলিশের ১৫৭ জন নারী পুলিশ শান্তিরক্ষী জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে নিয়োজিত আছেন। ইতোমধ্যে বাংলাদেশ পুলিশের এক হাজার ৭৬৬ জন নারী শান্তিরক্ষী বিভিন্ন শান্তিরক্ষা মিশনে সফলতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেছেন।

সংবাদটি শেয়ার করুন

শেয়ার করে  সঙ্গে থাকুন, আপনার অশুভ মতামতের জন্য সম্পাদক দায়ী নয়।


Leave a Reply

Your email address will not be published.