সুপার সাইক্লোন রূপে ‘মোখা’র রোববার কক্সবাজার দিয়ে প্রবেশ! নানা পদক্ষেপ, সপ্তাহ জুড়ে অতিভারী বর্ষণ

অথর
কুষ্টিয়া প্রেস ডেক্স :  কুষ্টিয়া, বাংলাদেশ
প্রকাশিত :১১ মে ২০২৩, ১২:৩৯ পূর্বাহ্ণ
সুপার সাইক্লোন রূপে ‘মোখা’র রোববার  কক্সবাজার দিয়ে প্রবেশ! নানা পদক্ষেপ, সপ্তাহ জুড়ে অতিভারী বর্ষণ

ঘূর্ণিঝড় ‘মোখা’ সুপার সাইক্লোনে রূপ নিয়ে আগামী রোববার (১৪ মে) নাগাদ কক্সবাজার উপকূল অতিক্রম করতে পারে বলে জানিয়েছেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ এনামুর রহমান। এছাড়া ঘূর্ণিঝড় মোখার প্রভাবে আগামী সপ্তাহে দেশের অধিকাংশ স্থানে অতিভারী বর্ষণ হবে বলে আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছেন। বুধবার (১০ মে) বিকালে সচিবালয়ে ঘূর্ণিঝড় ‘মোখা’র মোকাবেলার প্রস্তুতি নিয়ে আন্তঃমন্ত্রণালয় সভা শেষে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা জানান।

ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় সরকারের নেওয়া নানা পদক্ষেপের বিষয়েও জানান দুর্যোগ প্রতিমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘আমরা কক্সবাজার জেলার ৫৭৩টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত করেছি। মাঠ প্রশাসন ও স্বেচ্ছাসেবকদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। আশ্রয়কেন্দ্রে ১৪ টন ড্রাই কেকসহ শুকনা খাবার, ২০ লাখ টাকা, ২০০ মেট্রিক টন চালও বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।’
প্রতিমন্ত্রী জানান, কক্সবাজার জেলায় সব সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীর ছুটি বাতিল করা হয়েছে।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, সুস্পষ্ট লঘুচাপটি ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিতে পারে। ১৩ মে সন্ধ্যা থেকে ১৪ মে সকালের মধ্যে এটা আঘাত হানার পূর্বাভাস পাওয়া গেছে।বাংলাদেশ ও ভারতের আবহাওয়া অধিদপ্তরসহ বিভিন্ন দেশের পূর্বাভাস সংস্থাগুলোর প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে দেখেছি, এটা এখন উত্তর ও উত্তর-পশ্চিম দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। এটি বাংলাদেশের উপকূল থেকে এখনও গড়ে এক হাজার ৫০০ কিলোমিটার দক্ষিণে অবস্থান করছে। আগামী ১২ মে নাগাদ এটি উত্তর-পূর্ব দিকে মোড় নেবে।

তিনি বলেন, এটা সুপার সাইক্লোনে রূপ নেবে সেটা আমাদের পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে। এটার বাতাসের গতি ঘণ্টায় ২২০ থেকে ২৩২ কিলোমিটার পর্যন্ত হতে পারে। এখন পর্যন্ত বাংলাদেশের একটি জেলা কক্সবাজারই আক্রান্ত হওয়ার বলা হয়েছে পূর্বাভাসে। সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে আছে সেন্টমার্টিন ও টেকনাফের নিম্ন এলাকা।, ৬, ৭ বিপদ সংকেত জারি হলে মানুষকে আশ্রয় কেন্দ্রে নেওয়া শুরু হবে জানিয়ে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রী বলেন, ‘সিপিপিকে (ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচি) সতর্ক বার্তা প্রচারের জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। আমরা সব নির্দেশনা দিয়েছি চট্টগ্রামের যতগুলো উপকূলীয় উপজেলা আছে সেগুলোর আশ্রয় কেন্দ্রগুলো প্রস্তুত করার জন্য বলেছি। আশ্রয় কেন্দ্রে খাওয়ার জন্য আমরা ১৪ টন ড্রাই কেক ও টোস্ট বিস্কিট পাঠিয়ে দিয়েছি। আগামীকালের মধ্যে আরও ২০০ টন চাল চলে যাবে। আরও চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার জেলায় ১০ লাখ করে ২০ লাখ টাকা বরাদ্দ দিয়েছি আশ্রয় কেন্দ্রগুলো ব্যবস্থাপনার জন্য। ’

ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমরা আশা করি জানমালের ক্ষয়ক্ষতি শূন্যের কোঠায় নামিয়ে আনতে পারব। পূর্বাভাস অনুযায়ী ঘূর্ণিঝড়টি আঘাত হানলে রোহিঙ্গাদের বাঁশ, টিন, পলিথিন দিয়ে তৈরি করা বাসস্থান ক্ষয়-ক্ষতির সম্ভাবনা আছে বলেও জানান এনামুর রহমান।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ মো. বজলুর রশীদ বলেন, সাইক্লোন বা ঘূর্ণিঝড়ের সময় বাতাসের গতিবেগ ৬২ থেকে ৮৮ কিলোমিটার হলে সেটি হয় সাইক্লোন বা ঘূর্ণিঝড়। বাতাসের গতিবেগ ৮৮ থেকে ১১৭ হলে তাকে বলা হয় তীব্র ঘূর্ণিঝড়। আর বাতাস যদি ১১৭ থেকে ২২০ কিলোমিটার বেগে বয়, তবে তা হয় অতি তীব্র ঘূর্ণিঝড়। আর ২২০ কিলোমিটারের ওপরে বাতাসের গতিবেগ উঠলে তাকে সুপার সাইক্লোন বলা হয়।

এছাড়া ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাইন উদ্দিন উপকূলীয় এলাকাগুলোর ১৯ জেলার ১৪৯টি ফায়ার স্টেশনের সব কর্মকর্তা-কর্মচারীর ছুটি বাতিল করে সবাইকে সতর্ক ডিউটিতে থাকার নির্দেশনা দিয়েছেন। এছাড়া উপকূলবর্তী দুর্যোগপ্রবণ এলাকার জরুরি পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রতি ফায়ার স্টেশনে ৮ জনের সার্চ অ্যান্ড রেসকিউ টিম, ৫ জনের প্রাথমিক চিকিৎসাকারী দল এবং ৬ জনের একটি করে ওয়াটার রেসকিউ টিম প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এছাড়াও এসব এলাকায় রয়েছে ফায়ার সার্ভিসের প্রশিক্ষিত ১০,৬০৩ জন ভলান্টিয়ার।

সংবাদটি শেয়ার করুন

শেয়ার করে  সঙ্গে থাকুন, আপনার অশুভ মতামতের জন্য সম্পাদক দায়ী নয়।


Leave a Reply

Your email address will not be published.