যুক্তরাষ্ট্রে দেখা গেল কুষ্টিয়ার এক সময়ের রাজপথ কাঁপানো ত্যাগি ছাত্রনেতা জগলুল হায়দারকে!
যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন ডিসিতে দেখা গেল কুষ্টিয়া জেলার এক সময়ের রাজপথ কাঁপানো ত্যাগি ছাত্রনেতা তখা বিএনপির অতি আলোচিত ও জনপ্রিয় পরিচিতি মুখ জগলুল হায়দারকে!যিনি স্বৈরাচার বিরোধী দুর্বার আন্দোলনের জন্য রাজপথ কাঁপিয়েছিলেন। এই নেতা বিএনপিব দলে মূল্যায়িত না হওয়ায় অভিমান নিয়েই ৯০ দশকে পাড়ি জমায় সুদূর আমেরিকায়।
যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন ডিসিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ওয়ার্ল্ড ব্যাংকের প্রতিনিধিদের সাথে মিটিং উপলক্ষে ওয়ার্ল্ড ব্যাংকের সামনে পেনসেলভীনিয়া স্ট্রীটে যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির নেতা-কর্মীদের মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সভা অনুষ্ঠিত হয়। সোমবার (০১ মে, ২০২৩) প্রতিবাদসভা চলাকালে হঠাৎ চোখ আটকে যায় জাতিসংঘের নিয়মিত সাংবাদিক মুশফিকুল ফজল আনসারীর পাশে দাঁড়ানো আজ সাদাসিধে জীবনযাপন করা এই ত্যাগি নেতাকে।
যাকে হয়ত এখন বাংলার অনেকেই চিনবে না। প্রায় ৩৭ বছর আগের বিএনপির অতি জনপ্রিয় নেতাকে ছবিতে গোলবৃত্তের মধ্য যাকে দেখা যাচ্ছে। এরশাদ সরকার যখন মার্শাল ল’ দিয়ে দেশ চালাচ্ছিলেন, বিএনপির এই নেতা তখন স্বৈরাচার বিরোধী দুর্বার আন্দোলনের জন্য রাজপথ কাঁপিয়েছিলেন। তখন ১৯৮৫ সালের ২৭শে জানুয়ারী কুষ্টিয়ায় রাষ্ট্রপতি হুসেইন মোহাম্মদ এরশাদ’র জনসভায় স্টেজে উঠে তাকে (লাল হিল লেডিস জুতার) মালা পরিয়ে দিয়ে দুঃসাহসিক পরিচয় দিয়েছিল এই জগলুল হায়দার। কয়েকদিন পরে গ্রেফতার হয়ে জেলে যান জগলুল।
জগলুল হায়দার একসময় ছিলেন ছাত্রদলের কুষ্টিয়া জেলার নির্বাচিত সেক্রেটারি এবং সভাপতি। এছাড়াও ছিলেন খুলনা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক। যখন ঢাকা কাঁপাচ্ছিল অভি, নিরু আর আমানেরা তখন দেশের পশ্চিমবঙ্গ বলে খ্যাত ঝিনাইদাহ, কুষ্টিয়া, যশোর আর খুলনার আন্দোলনের আতংক ছিল যুগলুল হায়দার। আজও চা স্টল, রাজনৈতিক মহল ও কুষ্টিয়া জেলার সর্ব মহলে যুগলুল হায়দার নিয়ে আলোচনা হয়।
আমানউল্যার ছাত্র সংসদের এক প্রভাবশালী নেতা জানিয়েছেন, তৎকালীন সময়ে যে কয়জন ছাত্রনেতা ম্যাডামের সাথে সরাসরী সাক্ষাত করার অনুমতি ছিল তার উপরের তালিকায় ছিল এই জগলুল হায়দার। কুষ্টিয়া সদরের ঐতিহ্যবাহি পরিবারের এ সন্তান দেশে প্রচুর অর্থবিত্ত-প্রভাবসহ পরিবারের সবাই প্রতিষ্ঠিত হওয়া সত্ত্বেও কিছু হাইব্রিড আর তেলবাজেরা নিজেদের প্রতিদ্বন্দ্বি হিসেবে যাতে দাঁড়াতে না পারে সেজন্য মিথ্যা তথ্য কেন্দ্রীয় কিছু তেলবাজদের কানে ছড়ায়।
ফলে দলে মূল্যায়িত না হওয়ায় অভিমান নিয়েই জগলুল ৯০ দশকে পাড়ি জমায় সুদূর আমেরিকায়। কিন্তু জিয়ার সৈনিক বলে কথা নিজেকে অনেক চেষ্টা করেও আড়ালে-আবডালে রাখতে পারেনি। এক সময় রাজপথ কাঁপানো এই ত্যাগি ছাত্রনেতার এখনও ব্যাপক প্রভাব আছে দলের উপর মহলে বলে জানিয়েছে যুক্তরাজ্য এবং যুক্তরাষ্ট্রের বেশ কয়েকজন সিনিয়র নেতারা।
এ ব্যাপারে জগলুল হায়দারের সাথে ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, এখন সে যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাস অঙ্গরাজ্যে বসবাস করেন। রাজনীতি নিয়ে তাকে প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, “বাংলাদেশের রাজনীতি হল ব্যাগটানা আর তেলবাজদের জন্য। কারণ তেলবাজেরা দায়িত্ব পেয়ে আবার তেলবাজদের দিয়ে দল গঠন ও পরিচালনা করে। বিপ্লবী আর ত্যাগিদের দিয়ে নয়। বেশিরভাগ রাজনৈতিক নেতারা বিশ্বস্ত এবং নিঃস্বার্থ কর্মিদের মূল্যায়ন করেন না বরং তাদের দূরে সরিয়ে দিয়ে হাইব্রিড দালাল এবং চামচাদের মূল্যায়ন করেন”।
Leave a Reply