জেন্ডার বৈষম্য নারী-পুরুষ সবাইকেই ক্ষতিগ্রস্ত করে: জাতিসংঘ মহাসচিব
আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস বলেছেন, জেন্ডার পরিচয়জনিত বৈষম্য নারী-পুরুষ, কিশোর-কিশোরী সবাইকেই ক্ষতিগ্রস্ত করে। আন্তর্জাতিক নারী দিবস এসব প্রতিরোধে পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানাচ্ছে। ৮ মার্চ আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে দেওয়া এক বার্তায় তিনি এ কথা বলেন।
জাতিসংঘ মহাসচিব বলেন, এবারের এই আন্তর্জাতিক নারী দিবসে, আমরা বিশ্বের প্রতিটি জায়গায়, জীবনের সর্বক্ষেত্রে নারী ও কিশোরীদের সফলতা উদযাপন করছি।
পাশাপাশি তারা যে কাঠামোগত অবিচার, প্রান্তিকীকরণ ও সহিংসতা থেকে শুরু করে বহুমাত্রিক সংকটসহ নানাবিধ বাধার মুখোমুখি হয়, আমরা তাও স্বীকার করে নিচ্ছি। এসব বাধা ও সংকটে সর্বপ্রথম ও সবচেয়ে বেশিমাত্রায় তারাই আক্রান্ত হয়।
আরও স্বীকার করছি যে নারীরাই সবচেয়ে বেশি ব্যক্তিগত স্বাধীনতাবঞ্চিত হয় এবং নিজেদের জীবন ও দেহের ওপর তাদেরই সবচেয়ে বেশি অধিকার খর্বিত হয়।
ব্যাপক ত্যাগ স্বীকার করে নিজেদের মৌলিক অধিকারের দাবি জানানো নারীদের জন্য পদক্ষেপ নিতে হবে।
যৌন নিপীড়ন ও শোষণের বিরুদ্ধে নারীর সুরক্ষার জন্য পদক্ষেপ নিতে হবে এবং নারীর সর্বাত্মক অংশগ্রহণ ও নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠা তরাণ্বিত করতে পদক্ষেপ নিতে হবে।
১৮৫৭ সালের ৮ মার্চ। সে সময় যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে একটি সুচ কারখানার নারী শ্রমিকরা দৈনিক শ্রম ১২ ঘণ্টা থেকে কমিয়ে আট ঘণ্টায় আনা, ন্যায্য মজুরি এবং কর্মক্ষেত্রে সুস্থ ও স্বাস্থ্যকর পরিবেশ নিশ্চিত করার দাবিতে সোচ্চার হয়েছিলেন। আন্দোলন করার অপরাধে সে সময় গ্রেফতার হন অসংখ্য নারী। কারাগারে নির্যাতিত হন অনেকেই।
এর তিন বছর পরে ১৮৬০ সালের একই দিনে গঠন করা হয় ‘নারী শ্রমিক ইউনিয়ন’। ১৯০৮ সালে পোশাক ও বস্ত্রশিল্পের কারখানার প্রায় দেড় হাজার নারীশ্রমিক একই দাবিতে আন্দোলন করেন। অবশেষে আদায় করে নেন দৈনিক আট ঘণ্টা কাজ করার অধিকার।
১৯১০ সালের এই দিনে ডেনমাকের্র কোপেনহেগেনে অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক সমাজতান্ত্রিক সম্মেলনে জার্মানির নেত্রী ক্লারা জেটকিন ৮ মার্চকে আন্তর্জাতিক নারী দিবস হিসেবে ঘোষণা করেন। এরপর থেকেই সারাবিশ্বে দিবসটি আন্তর্জাতিক নারী দিবস হিসেবে পালিত হয়ে আসছে।
নারীর সম-অধিকার প্রতিষ্ঠায় ১৯১৪ সাল থেকে বিভিন্ন দেশ দিবসটি পালন করে আসছে। জাতিসংঘ ১৯৭৫ সালে আন্তর্জাতিক নারীবর্ষে ৮ মার্চকে আন্তর্জাতিক নারী দিবস হিসেবে পালন করা শুরু করে। এর দুই বছর পর ১৯৭৭ সালে জাতিসংঘ দিনটিকে আনুষ্ঠানিকভাবে আন্তর্জাতিক নারী দিবস হিসেবে স্বীকৃতি দেয়।
Leave a Reply