রেজুলেশনটি এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ
জাতিসংঘে সর্বসম্মতিক্রমে রোহিঙ্গা রেজুলেশন গৃহীত, ১০৯টি দেশ সহ-পৃষ্ঠপোষকতা প্রদান
জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের তৃতীয় কমিটিতে ‘মিয়ানমারের রোহিঙ্গা মুসলিমসহ অন্যান্য সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানবাধিকার পরিস্থিতি’ শীর্ষক রেজুলেশন সর্বসম্মতিক্রমে গৃহীত হয়েছে।
রেজুলেশনটিতে ১০৯টি দেশ সহ-পৃষ্ঠপোষকতা প্রদান করেছে, যা এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ। এবারের রেজুলেশনটি ওআইসি এবং ইউরোপীয় ইউনিয়ন যৌথভাবে উত্থাপন করেছে।
বৃহস্পতিবার (১৭ নভেম্বর) জাতিসংঘের বাংলাদেশ স্থায়ী মিশন এ তথ্য জানিয়েছে।
রেজুলেশনটিতে প্রাথমিকভাবে দৃষ্টি দেওয়া হয়েছে- মিয়ানমারের রোহিঙ্গা মুসলিম ও অন্যান্য সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানবাধিকার পরিস্থিতির ওপর, যা বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে আরও অবনতির শিকার হয়েছে। এতে রোহিঙ্গা সমস্যার মূল কারণ খুঁজে বের করা, রাখাইন রাজ্যে স্বপ্রণোদিত, নিরাপদ ও টেকসই প্রত্যাবর্তনের উপযোগী পরিবেশ সৃষ্টি করা এবং মিয়ানমারে নিযুক্ত জাতিসংঘ মহাসচিবের বিশেষ দূতসহ জাতিসংঘের সব মানবাধিকার ব্যবস্থাপনাকে পূর্ণ সহযোগিতা প্রদান করতে মিয়ানমারের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে।
মিয়ানমারের রাজনৈতিক ও মানবাধিকার পরিস্থিতির উন্নয়নে রেজুলেশনটিতে আঞ্চলিক দেশ ও আঞ্চলিক সংস্থাগুলো যেমন আসিয়ানের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার কথা তুলে ধরা হয়েছে। বিশেষ করে সর্বসম্মতিক্রমে আসিয়ানের পাঁচ দফা সুপারিশের দ্রুত বাস্তবায়নের ওপর গুরত্বারোপ করা হয়েছে। এছাড়া, চলমান বিচার ও দায়বদ্ধতা নিরূপণ প্রক্রিয়ার ওপর রেজুলেশনটিতে সজাগ দৃষ্টি বজায় রাখার কথা বলা হয়েছে।
পাশাপাশি আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে মামলার অগ্রগতি এবং আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের প্রসিকিউশনের তদন্তকে স্বাগত জানানো হয়েছে।
রেজুলেশনটিতে বাংলাদেশের প্রতি সংহতি প্রকাশ ও বাংলাদেশের নেওয়া মানবিক প্রচেষ্টার স্বীকৃতি প্রদান করা হয়েছে। রোহিঙ্গাদের ওপর মানবাধিকার লঙ্ঘনের ন্যায় বিচার ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে আইসিসি, আইআইএমএম ও অন্যান্য দায়বদ্ধতা নিরূপণকারীদের সঙ্গে বাংলাদেশ যেভাবে সহযোগিতা অব্যাহত রেখেছে তা প্রশংসিত হয়েছে। ‘রেসপনসিবিলিটি অ্যান্ড বার্ডেন শেয়ারিং’ নীতির আওতায় জাতিসংঘের সদস্য দেশগুলো যেন বাংলাদেশে মানবিক আশ্রয়ে থাকা রোহিঙ্গাদের সহায়তা অব্যাহত রাখে সে আহ্বানও জানানো হয়েছে এবারের রেজুলেশনে।
জাতিসংঘের এ রেজুলেশনটি রোহিঙ্গা মুসলিমদের প্রতি বিভিন্ন অঞ্চল ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সংহতি প্রকাশের একটি অনন্য উদাহরণ। তবে এটি অত্যন্ত উদ্বেগের বিষয় যে মিয়ানমারের পরিস্থিতি ক্রমাগত অবনতির দিকে যাচ্ছে। যার ফলে বিলম্বিত হচ্ছে রোহিঙ্গাদের স্বদেশ প্রত্যাবর্তন।
Leave a Reply