স্বর্ণের রয়েছে কিছু স্বাস্থ্য উপকারিতাও
স্বর্ণ ব্যবহার করলে যেসব উপকার পাবেন
কোথাও বেড়াতে গেলে বা কোন অনুষ্ঠানে নারী-পুরুষ উভয়ই সেই থেকে স্বর্ণ ব্যবহার করে আসছেন।স্বর্ণ যেমন সম্পদ তেমনি সৌন্দর্য ফুটিয়ে তুলতে স্বর্ণের গয়নার বিকল্প নেই।
স্বর্ণ শুধু সৌন্দর্য বাড়ানোর কাজেই নয়, অনেক সময় সম্পদ হিসেবেও কাজ করে স্বর্ণ। এই দামী ধাতু নানা সময় পুঁজি হিসেবে কাজ করে। এই দুই উপকারিতা ছাড়াও স্বর্ণের রয়েছে কিছু স্বাস্থ্য উপকারিতাও। গবেষণার ফল কিন্তু এমনটাই বলছে। স্বর্ণের বিভিন্ন উপকারী বৈশিষ্ট্যের কারণে স্বাস্থ্য সম্পর্কিত বিভিন্ন সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে।জেনে নিন স্বর্ণের স্বাস্থ্য উপকারিতা সম্পর্কে-
তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে
স্বর্ণে আছে প্রদাহ বিরোধী বৈশিষ্ট্য। এমন তথ্যই মিলেছে বিভিন্ন গবেষণায়। ১৯ এর দশকের শুরুর দিকে একজন চিকিৎসক এই সম্পর্কিত একটি ব্যবহারিক প্রয়োগ করেছিলেন। শরীরের ফোলাভাব ও শরীরে ব্যথা কমাতে অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি বৈশিষ্ট্য সবচেয়ে কার্যকরী। এভাবে নিয়ন্ত্রণ করে শরীরের তাপমাত্রা। শুধু স্বর্ণে নয়, এই বৈশিষ্ট্যগুলো পাওয়া যায় তামা ধাতুতেও।
নিরাময় করে ক্ষত
শরীরের ক্ষত সারাতেও কাজ করে স্বর্ণ। ক্ষতের চিকিত্সার জন্য স্বর্ণের ব্যবহার বেশ পুরোনো। ক্ষতস্থানে স্বর্ণ প্রয়োগ করা হলে তা সংক্রমণ রোধ করে এবং দ্রুত সেরে উঠতে সাহায্য করে।
ত্বকের সমস্যা দূর করে
২৪ ক্যারেট স্বর্ণ ত্বক আরও বেশি সুন্দর করে তুলতে পারে। এটি ত্বকে উষ্ণতা এবং স্নিগ্ধ কম্পন সরবরাহ করে। ফলে এটি শরীরের কোষগুলোকে পুনরায় জন্মাতে সাহায্য করে। উপকারী এই ধাতু ফুসকুড়ি, ক্ষত, একজিমা, ছত্রাকের সংক্রমণ, পোড়া ইত্যাদি ধরনের ত্বকের সমস্যা সারাতে সাহায্য করে।
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়
স্বর্ণের গয়না পরলে রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা শক্তিশালী হয়ে ওঠে, এমনটাই বলছেন বিশেষজ্ঞরা। এভাবেই স্বর্ণ নানা ধরনের সংক্রমণ থেকে আমাদের দূরে থাকতে সাহায্য করে।
ছোট বয়সে
লেখাপড়া করা ছাত্রছাত্রীদের যদি ছোট্ট একটা সোনার মাদুলি বানিয়ে তাতে ইষ্টদেবতার ফুল দিয়ে গলায় পরিয়ে দেওয়া হয়, তা হলে সন্তানের লেখাপড়ার প্রতি একাগ্রতা বেড়ে যায় এবং সুন্দর সুস্থ জীবনযাপন করতে পারে।
দাম্পত্য সমস্যা
দাম্পত্য সমস্যা কাটাতে ছোট্ট একটি সোনার লকেট বা সরু সোনার চেইন পরলে, অনেক ক্ষেত্রেই দাম্পত্য কলহ কমে যায়। জীবন সুখ-শান্তিতে ভরে থাকে।
অনামিকায় সোনা পরার উপকারিতা
অনামিকায় সোনার আংটি ধারণ করলে জীবনে সাফল্যের শিখরে পৌঁছনো যায় খুব সহজেই। বৃহস্পতি তুঙ্গে রাখতে অনামিকায় সোনা ধারণ করার পরামর্শ দেন জ্যোতিষবিদরা।
কর্মে উৎসাহ ও আত্মবিশ্বাস
সঠিকভাবে সোনার ব্যবহার মানুষের আত্মবিশ্বাসকে বাড়িয়ে তোলে, এটাই মনে করেন জ্যোতিষবিদরা। একটু সোনার ব্যবহার কর্মে উৎসাহ ও আত্মবিশ্বাস প্রচুর বাড়িয়ে তুলতে সাহায্য করে।
গবেষকদের মন্তব্য
নতুন এক গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে, ফুসফুস ক্যানসারে সোনার অতি ক্ষুদ্র কণা ব্যবহার করা হলে তা ক্যান্সার বিরোধী ওষুধের কার্যকারিতা বহুগুণে বাড়িয়ে দিতে পারে।
চীনের এলকেমিস্টরা মনে করেন, সোনা পান করলে এবং খাওয়ার কাজে সোনার বাসন ব্যবহার করলে দীর্ঘায়ু লাভ করা যায়। খাবারকে আকর্ষণীয় করে তুলতে এবং সোনার স্বাস্থ্যগুণ দ্বারা উপকৃত হতে আজও বিভিন্ন খাবারে সোনার পাত ব্যবহার করা হয়।
গবেষণায় দেখা গেছে, খাঁটি সোনায় প্রদাহবিরোধী বৈশিষ্ট্য রয়েছে। ফলে এটি পরিধান করলে রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিসের উপসর্গের সময়ে উল্লেখযোগ্যহারে উপশম হয়। বিংশ শতাব্দীর আগে হৃদরোগ, গুটি বসন্ত রোগের চিকিৎসায় সোনা ব্যবহার করা হতো। বলা হয়ে থাকে, খাঁটি সোনা কোনো সংক্রমণ বা ক্ষত স্থানে রাখলে এটি সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ এবং ক্ষত সারাতে সাহায্য করে।
এছাড়া সোনা রক্ত সঞ্চালন প্রক্রিয়ায় উন্নতি ঘটায় ফলে শরীরের সব অংশে অক্সিজেন পৌঁছাতে সাহায্য করে। সোনার অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি বৈশিষ্ট্য শরীরে ব্যথা এবং শরীরে ফোলাভাব কমাতে সাহায্য করে। এইভাবে শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে। প্রাচীনকাল থেকে মানসিক চাপ দূর করতে খাঁটি সোনার ব্যবহার হয়ে আসছে।
জার্মান বিজ্ঞান ভিত্তিক একটি জার্নালে স্কটল্যান্ডের এডিনবার্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানীরা উল্লেখ করেন, জেব্রা ফিসের মস্তিষ্কের মধ্যে সোনার টুকরা বসিয়ে তারা দেখেন সেটি ওষুধের কার্যকারিতার মাত্রা বাড়িয়ে দিয়েছে।
টিউমার বা ক্যান্সার ধরা পড়ার পর কেমোথেরাপি দেওয়ার সময় শরীরের অন্য জায়গায় প্রভাব পড়ার আশঙ্কা থাকে। সোনার ছোট কণিকার মাধ্যমে ক্যান্সার কোষ বা টিউমার সারাতে সাহায্য করতে পারে বলেও আশা প্রকাশ করেছেন বিজ্ঞানীরা। যদিও কোনো মানবদেহে এখনও পরীক্ষা করেননি তারা।
তবে বিজ্ঞানীরা আশা করছেন, কেমোথেরাপির সময় পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া কমাতে সোনার কণা বেশ ভালো ভূমিকা রাখতে পারে।
শুধু নারীরা নন, পুরুষরাও অনেকেই সোনা ব্যবহার করতে ভালোবাসেন। দামি ধাতু হওয়ায় সোনা শুধু অলঙ্কার হিসেবেই নয়, ভবিষ্যতের পুঁজি হিসেবেও কাজে লাগে।
Leave a Reply