ফেরত পাঠানোর চেয়ে, আন্তর্জাতিক সংগঠনগুলো তাদের সুযোগ সুবিধা দেওয়ায় ব্যস্ত

মিয়ামনমার সরকার আন্তরিক হলে তারা রোহিঙ্গাদের রাখাইনে নিতে পারে

অথর
কুষ্টিয়া প্রেস ডেক্স :  কুষ্টিয়া, বাংলাদেশ
প্রকাশিত :২১ মার্চ ২০২২, ১:৪২ পূর্বাহ্ণ
মিয়ামনমার সরকার আন্তরিক হলে তারা রোহিঙ্গাদের রাখাইনে নিতে পারে

অনেক কাঠখড় পোড়ানোর পর অবশেষে ৭০০ রোহিঙ্গাকে ফেরত নিতে চায় মিয়ানমার। এ বিষয়ে তারা তালিকাও দিয়েছে।এর আগেও দুইবার রোহিঙ্গাদের ফেরত নেওয়ার দিনক্ষণ ঠিক হলেও তাদের ফেরত পাঠানো যায়নি। তাই এবারও প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে, মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠানোর বিষয়টি এবার সফল হবে কিনা!

রোববার (২০ মার্চ) তথ্যমন্ত্রী ড. হাসান মাহমুদ তার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে জানিয়েছেন, মিয়ানমারের জান্তা সরকার এবার রোহিঙ্গাদের ফেরত নিতে নিজেদের আগ্রহের কথা জানিয়ে চিঠি দিয়েছে।

যে কোনো মুহূর্তে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া শুরু হতে পারে এবং এ বিষয়ে দুই দেশের সব ধরনের প্রস্তুতিও রয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি।
তবে এই প্রক্রিয়া আদৌ আলোর মুখ দেখবে কিনা, তা এখনও নির্ধারিত নয়।

মিয়ানমার সরকার যে ৭০০ রোহিঙ্গার তালিকা দিয়েছে তাাতে রয়েছে বেশ কিছু সমস্যা। বিশেষ করে তারা পরিবারের অনেক সদস্যকে বাদ দিয়ে এক পরিবার থেকে মাত্র কয়েক জনকে এই তালিকায় ঠাঁই দিয়েছে। ফলে রোহিঙ্গারাও এভাবে যেতে অনাগ্রহী এবং সরকারের পক্ষ থেকেও পুরো পরিবারসহ পাঠানোতে আগ্রহ দেখা গেছে।
এ বিষয়ে শনিবার (১৯ মার্চ) সন্ধ্যায় সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আব্দুল মোমেন।

এসময় রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন নিয়ে তিনি বলেন, ‘তারা (মিয়ানমার) বারবার বলে। এর আগে তারা বলেছিল ২৮ হাজারের মতো। পরে ১১ হাজার বললো। তারপর এখন বলে ৭০০ জন। তাও তারা এমন একটা লিস্ট দিয়েছে, আমরা পরীক্ষা দেখলাম মাকে নেবে, বাবাকে নেবে না। বাবা-মাকে নেবে, ছেলে-মেয়েকে নেবে না। এরকম ভাগভাগ করে রেখেছে। এর ফলে রোহিঙ্গারা যাবে কি না, এই রকম পরিস্থিতিতে! আমরা বলেছি পরিবার ধরে নিতে হবে, না হলে এটা সম্ভব না। মনে হয়, যেভাবে তারা তালিকা তৈরি করেছে, আমাদের রোহিঙ্গারা স্বেচ্ছায় যাবে না। তবে রাখাইন এখন শান্তিপূর্ণ। মিয়ামনমার সরকার আন্তরিক হলে তারা রোহিঙ্গাদের রাখাইনে নিতে পারে। ’
এদিকে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলমও গত সপ্তাহে সংবাদমাধ্যমকে এমনই জানিয়েছিলেন। তিনি সেসময় বলেন, ‘মিয়ানমার প্রথম দফায় ৭০০ রোহিঙ্গাকে ফেরত নিতে চায়। কিন্তু আমরা চাই এক হাজার ১০০ রোহিঙ্গাকে প্রথম দফায় ফেরত নেওয়া হোক। এটা হলে একই পরিবারের সবাই যেতে পারবেন। তা না হলে পরিবারের মধ্যে বিচ্ছিন্নতা তৈরি হবে। ’
পরিবারের বিচ্ছিন্নতাকে পাশ কাটিয়ে এখন রোহিঙ্গারা ফিরবে কিনা এবং সরকার তাদের সঠিকভাবে ফেরাতে পারবে কিনা সেটাই দেখার বিষয়। তবে এ বিষয়ে সরকারের উচ্চ মহলেও রয়েছে সন্দেহে। বিশেষ করে বিশ্বের বড় বড় এনজিওগুলো যখন রোহিঙ্গাদের পাশে রয়েছে, তখন সরকারও বিষয়টি নিয়ে ভাবছে যে রোহিঙ্গারা আদৌ ফিরবে কিনা! তবে এনজিওগুলোর মূল ফোকাস বাংলাদেশের রোহিঙ্গাদের উন্নত জীবনযাপনের পরিবর্তে মিয়ানমারে তাদের জন্য পরিবেশ সৃষ্টি হওয়া উচিত বলেই মনে করছেন তারা।
শনিবার (১৯ মার্চ) সন্ধ্যায় এ বিষয়েও কথা বলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। এসময় সাংবাদিকদের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আব্দুল মোমেন বলেন, একটি বিষয়ে আপনাদের লক্ষ্য রাখা উচিত, বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংগঠন, ইউএনএইচসিআর, ইউএনসিআরসি, ইউএনডিপি, অমুক-তমুক যতগুলো আছে, তাদের মেইন ফোকাস হওয়া উচিত এখন রাখাইন। সেখানে যেন এরা স্বেচ্ছায় যেতে পারে, তার জন্য ব্যবস্থা নেওয়া। কিন্তু তারা খেয়াল রাখে শুধু বাংলাদেশে ওরা ভালো অবস্থানে আছে কি না! তারা মনে করে বাংলাদেশে তাদের সুন্দরভাবে রাখা, তাদের চাকরি দেওয়া, অন্য বাঙালিদের মতো সুযোগ সুবিধা দেওয়ার চেষ্টা করা, এসব নিয়ে তারা ব্যস্ত।

সংবাদটি শেয়ার করুন

শেয়ার করে  সঙ্গে থাকুন, আপনার অশুভ মতামতের জন্য সম্পাদক দায়ী নয়।


Leave a Reply

Your email address will not be published.