মানবাধিকার সুরক্ষায় অগ্রাধিকার দিতে বাংলাদেশের প্রতি আহ্বান জাতিসংঘ বিশেষজ্ঞদের
মানবাধিকার সুরক্ষায় অগ্রাধিকার দিয়ে বড় ধরনের সংস্কার পদক্ষেপ গ্রহণে উদ্যোগী হতে বাংলাদেশ সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন জাতিসংঘের একদল বিশেষজ্ঞ। জাতিসংঘের মানবাধিকার-বিষয়ক হাইকমিশনারের কার্যালয়ের (ওএইচসিএইচআর) ওয়েবসাইটে বুধবার প্রকাশিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ আহ্বান জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে জাতিসংঘের বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, “বর্তমান সরকার টানা চতুর্থবারের মতো ক্ষমতায় এসেছে। দেশটিতে বিদ্যমান দমনমূলক পরিস্থিতি থেকে সরে এসে অংশগ্রহণমূলক রাজনীতি ও সংলাপের পথে ফিরতে ওই সংস্কার করতে হবে। নাগরিক সমাজের প্রতিনিধি, মানবাধিকারকর্মী, সাংবাদিক ও রাজনৈতিক কর্মীদের ওপর আক্রমণ, হয়রানি ও ভয়ভীতি দেখানোর ঘটনায় আমরা উদ্বিগ্ন।’
তারা বলছেন, জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে বিরোধী দলের আনুমানিক ২৫ হাজার নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তারের খবর জানা যাচ্ছে। এ ছাড়া নির্বাচনকেন্দ্রিক সহিংসতায় দেশটিতে ৫৬ জন নিহত হয়েছেন। রাজনৈতিক বন্দীদের নির্যাতন ও চিকিৎসাসেবা না দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা অতিরিক্ত বলপ্রয়োগ করছেন। দুর্বৃত্তরা অগ্নিকাণ্ড ও সহিংসতার ঘটনাও ঘটিয়েছে। কিন্তু দেশটিতে মানবাধিকার লঙ্ঘনের এসব ঘটনা নিয়ে স্বাধীনভাবে তদন্ত করা হয়নি।
নির্বাচনব্যবস্থার ওপর আস্থা না থাকা প্রধান বিরোধী দল বিএনপিসহ কিছু রাজনৈতিক দলের নির্বাচন বর্জন করার বিষয়টি উল্লেখ করেছেন জাতিসংঘের বিশেষজ্ঞরা। তাঁরা বলছেন, ক্ষমতাসীন দলের সদস্যরা ভোট দেওয়ার জন্য ভোটারদের চাপ দেন বলে অভিযোগ আছে। ভোট না দিলে হামলা ও সামাজিক সুরক্ষার আওতায় পাওয়া সরকারি আর্থিক সুবিধা বাতিলেরও হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।
জাতিসংঘের বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, ‘এ নিয়ে আমরা বাংলাদেশ সরকারকে চিঠি দিয়েছি। মানবাধিকার লঙ্ঘনের যেসব অভিযোগ উঠেছে, সেগুলো অবিলম্বে স্বাধীনভাবে তদন্ত করার জন্য বাংলাদেশ সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছি।’
জাতিসংঘের বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ‘বাংলাদেশে মানবাধিকার, মৌলিক অধিকার ও আইনের শাসনের বিপজ্জনক অবনতি এবং একই সঙ্গে রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর ওপর দেশটির মানুষের আস্থা নষ্ট হতে দেখে আমরা গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। এতে দেশটির ভাবমূর্তি যেমন নষ্ট হচ্ছে, তেমনি একই সঙ্গে এতে করে বাংলাদেশের সার্বিক সামাজিক ও অর্থনৈতিক উন্নয়ন হুমকির মুখে পড়বে।’
Leave a Reply