দেশ ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বিভিন্ন কর্মসূচিতে

মহান শহিদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস

অথর
কুষ্টিয়া প্রেস ডেক্স :  কুষ্টিয়া, বাংলাদেশ
প্রকাশিত :২১ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ৪:৩৬ পূর্বাহ্ণ
মহান শহিদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস

আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো ২১ শে ফেব্রুয়ারি, আমি কি ভুলিতে পারি’ । ভাষা সংগ্রামী আব্দুল গাফফার চৌধুরীর লেখা এই বিখ্যাত গান আমাদের স্মরণ করিয়ে দেয় ২১ শে ফেব্রুয়ারির শোকবহ দিনের কথা।

সেই শোক গাঁথা দিনটি আজ শুধু শোকের নয়, আনন্দেরও। ইউনেস্কো কর্তৃক আন্তর্জাতিক মাতৃভাষার স্বীকৃতি লাভ করেছে দিনটি। এ কারণে শোকের আবহ নিয়ে আজ সোমবার ২১ শে ফেব্রুয়ারি দিনটি উদযাপিত হচ্ছে দেশব্যাপী। বিশ্বের অন্যান্য দেশেও দিনটি উদযাপিত হচ্ছে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা বাঙালীরাও দিনটি উদযাপন করছেন ভাবগম্ভীর্যের সঙ্গে।
মহান শহিদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস সোমবার মধ্য রাতে কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারের বেদীতে পুষ্পস্তবক অর্পণ এবং বিভিন্ন স্থানে আলোচনা সভাসহ নানা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে জাতি একুশের মহান শহিদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাচ্ছেন। রাজধানীর ঢাকার ন্যায় সারাদেশে যথাযোগ্য মর্যাদায় দিবসটি পালিত হচ্ছে।

একুশের প্রথম প্রহরে রাত ১২টা ১ মিনিটে কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণের মধ্য দিয়ে একুশে ফেব্রুয়ারির কর্মসূচি শুরু হয়। কালো ব্যাজ ধারণসহ আজিমপুর কবরস্থানে শহিদদের কবরে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ ও শ্রদ্ধা জানানো হয়।

শহিদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণী দিয়েছেন।

জাতিসংঘের শিক্ষা, বিজ্ঞান ও সাংস্কৃতি বিষয়ক সংস্থা (ইউনেস্কো) মহান একুশের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের স্বীকৃতি দেয়ার পর থেকে আন্তর্জাতিক পর্যায়েও গত কয়েক বছর ধরে দিবসটি পালিত হচ্ছে।

২১ শে ফেব্রুয়ারি হচ্ছে বাঙালি জাতির জন্য শোক ও বেদনার দিন। মায়ের ভাষা বাংলার অধিকার আদায়ের জন্য ১৯৫২ সালের এই দিনে জীবন দিয়েছেন অকুতোভয় তরুণ-যুবকরা। পৃথিবীর আর কোথাও মায়ের ভাষার অধিকার প্রতিষ্ঠায় এতো দিতে হয়নি। এই কারণে এই দিনটি বাঙালির শোকের দিন। বুকের তাজা রক্তের বিনিময়ে শহিদরা বাঙালি জাতিকে মায়ের ভাষা এনে দিয়েছিলেন।

১৯৫২ সালের এদিনে ‘বাংলাকে’ রাষ্ট্রভাষা করার দাবিতে বাংলার (তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান) ছাত্র ও যুবসমাজসহ সর্বস্তরের মানুষ সে সময়ের শাসকগোষ্ঠির চোখ-রাঙ্গানি ও প্রশাসনের ১৪৪ ধারা উপেক্ষা করে স্বতঃস্ফূর্তভাবে রাজপথে নেমে আসে।

মায়ের ভাষা প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে দুর্বার গতি পাকিস্তানি শাসকদের শংকিত করে তোলায় সেদিন ছাত্র-জনতার মিছিলে পুলিশ গুলি চালালে সালাম, জব্বার, শফিক, বরকত ও রফিক গুলিবিদ্ধ হয়ে শহীদ হন।

একুশে ফেব্রুয়ারি সরকারি ছুটি। এদিন দেশের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের ভবনে সূর্যোদয়ের সাথে সাথে সঠিক নিয়মে, সঠিক রং ও মাপে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত এবং কালো পতাকা উত্তোলন করা হয়।

দিবসটি পালন উপলক্ষে জাতীয় অনুষ্ঠানের সাথে সঙ্গতি রেখে বর্তমান কোভিড-১৯ পরিস্থিতি বিবেচনায় যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে দেশের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, সকল স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠান, জেলা ও উপজেলা প্রশাসন, বিদেশে অবস্থিত বাংলাদেশ মিশনসমূহ বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণের মধ্যে দিয়ে পালন করছেন।

সংবাদটি শেয়ার করুন

শেয়ার করে  সঙ্গে থাকুন, আপনার অশুভ মতামতের জন্য সম্পাদক দায়ী নয়।


Leave a Reply

Your email address will not be published.