১৪ দলের ঐক্য বজায় থাকবে, জোটবদ্ধভাবে নির্বাচন
সাম্প্রদায়িক শক্তির উত্থানের মোকাবিলায় ১৪ দলের ভূমিকা অব্যাহত থাকবে
আওয়ামী লীগের একক সরকার গঠন নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে ১৪ দল। আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগেই সেটি আলোচনা করে নেওয়ার কথা বলেছেন জোট নেতারা। প্রধানমন্ত্রীর কাছে ১৪ দলের সম্পর্ক নিয়ে (টানাপোড়েন) উত্থাপিত প্রশ্নের সমাধানও চাইছেন তারা। তবে আগামী নির্বাচন জোটগতভাবে করার বিষয়ে সম্মত তারা। নেতাদের দাবি, যে কোনোভাবে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি রোধ ও রেশনিং ব্যবস্থা চালু করা যায় কি না, সেটি ভেবে দেখতে হবে।
দীর্ঘ দুই বছর পর বৈঠক করেছে ক্ষমতাসীন ১৪ দলীয় জোট। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আহ্বানে মঙ্গলবার গণভবনে এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এদিন বেলা সাড়ে ১১টায় বৈঠক শুরু হয়ে শেষ হয় বিকেল তিনটায়। বাংলাদেশ জাসদ ছাড়া ১৪ দলের সব শরিক দলের নেতারা এতে অংশ নেন। দীর্ঘ সময় ধরে বেশ খোলামেলা আলোচনা হয় বৈঠকে।
দীর্ঘদিন পরের এই বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে নানা বিষয় তুলে ধরেন শরিক দলের নেতারা। তাদের আলোচনায় সরকার গঠন, জোটের সম্পর্ক জোরদার, জোট শক্তিশালীকরণ ও কর্মসূচির বিষয়গুলো উঠে আসে। পাশাপাশি চলমান দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির লাগাম টানারও পরামর্শ আসে। দরিদ্র্য ও মধ্যবিত্তের সংকট সমাধানের কথা হয়। রেশনিং ব্যবস্থা চালু করা যায় কি না, সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের পরামর্শ আসে। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের বাংলাদেশের অবস্থান নিয়েও কথা হয় বৈঠকে।
আগামী জাতীয় নির্বাচন ও সরকার গঠন নিয়ে ১৪ দলের নেতারা বলেছেন, গতবার আমরা ১৪ দলের জোটের ভিত্তিতে নির্বাচন করলাম, কিন্তু সরকার হলো আওয়ামী লীগের। এটা কিভাবে সম্ভব? এটা আলোচনার ভিত্তিতে যদি হত, তাহলে আমাদের (১৪ দলের) আপত্তি ছিল না। কিন্তু একতরফাভাবে যে আওয়ামী লীগ বলে দিলো- সরকার হবে আওয়ামী লীগের। তাহলে ১৪ দলের ভিত্তিতে নির্বাচন করার কী যৌক্তিকতা আছে?
ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন বলেন, ১৪ দলীয় জোটের ঐক্য, বর্তমান পরিস্থিতি, দ্রব্যমূল্য সব বিষয় নিয়ে খোলামেলা আলোচনা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীও আলোচনায় অংশ নিয়েছেন। বহুদিন পরে একটা ভালো আলোচনা হয়েছে। আমরা বলেছি, সরকারের সঙ্গে ১৪ দলের সম্পর্কে যে প্রশ্নটা আছে, সেটাও আপনার নির্মূল করতে হবে। কারণ সব ব্যাপারে আমরা একমত নই। সব বিষয় আমরা মেনে নিয়েছি ব্যাপারটা এ রকম নয়। সুতরাং যেখানে যেটা আছে, সেখানে কোনো ব্যত্যয় থাকলে, বিষয়টি আলোচনায় আসে।
এদিকে বৈঠকের পরে গণমাধ্যমে কথা বলেছেন ১৪ দলের সমন্বয়ক আমির হোসেন আমু। তিনি বলেন, ১৪ দলের সঙ্গে ঐক্য বজায় থাকবে। জোটবদ্ধভাবে নির্বাচন করা হবে। সাম্প্রদায়িক শক্তির উত্থানের মোকাবিলায় ১৪ দলের যে ভূমিকা সেটিও অব্যাহত থাকবে।
বিএনপি যদি নির্বাচনে না আসে তখন কি জোটবদ্ধ নির্বাচন হবে? সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে আমু বলেন, বিএনপি নির্বাচনে আসবে না এটা তারা বলছে। কিন্তু শেষ মুহূর্তে কী করবে, এটা দেখার পর আমরা সিদ্ধান্ত নেব।
বিএনপির দেশব্যাপী আন্দোলনের বিরুদ্ধে ১৪ দল মাঠে নামবে জানিয়ে আমু বলেন, বিএনপির আন্দোলনের বিরুদ্ধে ১৪ দল মাঠে নামবে। প্রধানমন্ত্রী যে নির্দেশ দেবেন। সে অনুযায়ী ১৪ দলকে ঐক্যবদ্ধ করে কাজ শুরু করা হবে।
Leave a Reply