১১ আসামি আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন

কুষ্টিয়া থেকে ছেড়ে যাওয়া বাসে ধর্ষণ ও ডাকাতি মামলায় মোট ১৩ জন গ্রেপ্তার

অথর
কুষ্টিয়া প্রেস ডেক্স :  কুষ্টিয়া, বাংলাদেশ
প্রকাশিত :১২ আগস্ট ২০২২, ৩:৫৯ পূর্বাহ্ণ
কুষ্টিয়া থেকে ছেড়ে যাওয়া বাসে ধর্ষণ ও ডাকাতি মামলায় মোট ১৩ জন গ্রেপ্তার

কুষ্টিয়া থেকে ছেড়ে আসা নারায়ণগঞ্জ হয়ে চট্টগ্রামগামী ঈগল পরিবহনের চলন্ত বাসে এক নারী যাত্রীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ ও অস্ত্রের মুখে ঘুমন্ত যাত্রীদের হাত-মুখ ও চোখ বেঁধে জিম্মি করে নির্যাতন ও লুটপাটের ঘটনায় আদালতের কাছে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়ছেন আরও অভিযুক্ত ২ আসামি। তারা হলেন-ঘটনার মূলপরিকল্পনাকারী মাহমুদুল হাসান মুন্না ওরফে রতন হোসেন (২১) এবং আব্দুল মান্নান (২২)।বৃহস্পতিবার (১১ আগস্ট) বিকালে টাঙ্গাইলের চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক নওরিন করিমের আদালতে ১৬৪ ধারায় এ জবানবন্দি দেন তারা। তিনি আরও বলেন, তবে হাসমত আলী ওরফে দীপু ও জীবন প্রামাণিক আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেননি। পরে চারজনকে কারাগারে পাঠানো হয়।

এ বিষয়ে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও জেলা গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক হেলাল উদ্দিন বলেন, এ মামলায় মোট ১৩ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এর মধ্যে ১১ আসামি আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। আসামিরা সবাই টাঙ্গাইল জেলা কারাগারে রয়েছেন।

স্বীকারোক্তি দেওয়া আসামিরা হলেন- মাহমুদুল হাসান মুন্না ওরফে রতন হোসেন, রাজা মিয়া, আউয়াল, নুরনবী, আব্দুল মান্নান, সোহাগ মণ্ডল, বাবু হোসেন জুলহাস, আসলাম তালুকদার ওরফে রায়হান, রাসেল তালুকদার, আলাউদ্দিন ও নাঈম সরকার।

এর আগে গত বৃহস্পতিবার (৪ আগস্ট) ভোরে টাঙ্গাইল শহরের নতুন বাস টার্মিনাল এলাকা থেকে রাজা মিয়াকে (৩২) গ্রেপ্তার করে জেলা ডিবি পুলিশ। পরদিন শুক্রবার (৫ আগস্ট) ভোরে গাজীপুরের কালিয়াকৈর ও সোহাগপল্লী থেকে মো. আউয়াল ও নুরনবী নামে আরও দুজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। শনিবার (৬ আগস্ট) এই তিন আসামি আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। পরে তাদের কারাগারে পাঠিয়ে দেওয়া হয়।

এরপর গত রবিবার (৭ আগস্ট) রাতে ঢাকা, গাজীপুর ও সিরাজগঞ্জ এলাকায় অভিযান চালিয়ে মূল পরিকল্পনাকারীসহ ডাকাত চক্রের ১০ সদস্যকে গ্রেপ্তার করে র‍্যাব। পরদিন সোমবার (৮ আগস্ট) রাত ৮টার দিকে তাদের ঢাকা থেকে টাঙ্গাইলের ডিবি কার্যালয়ে নিয়ে আসা হয়।

প্রসঙ্গত, গত ২ আগস্ট সন্ধ্যায় কুষ্টিয়ার দৌলতপুর থেকে ঈগল পরিবহনের একটি বাস নারায়ণগঞ্জ হয়ে চট্টগ্রামের উদ্দেশে রওনা হয়। রাত সাড়ে ১১টার দিকে সিরাজগঞ্জের একটি খাবার হোটেলে যাত্রা বিরতি করে। সেখান থেকে যাত্রা শুরুর পর তিন দফায় যাত্রীবেশে ডাকাতরা বাসে উঠে।

পরে বাসটি বঙ্গবন্ধু সেতু পার হওয়ার পর আনুমানিক রাত দেড়টার দিকে যাত্রীরা ঘুমানোর এক পর্যায়ে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের টাঙ্গাইলের নাটিয়াপাড়া এলাকায় পৌঁছালে ডাকাত দলের সদস্যরা অস্ত্র নিয়ে পুরো বাসের নিয়ন্ত্রণ নেন এবং কমপক্ষে ৩ ঘণ্টা তাদের নিয়ন্ত্রণে রাখে। এরই মধ্যে প্রথমে পুরুষ যাত্রীদের তাদের পোশাক খুলে হাত মুখ বাধা হয়।

অন্যদিকে নারী যাত্রীদের বাসের পর্দা ও সিটের কভার খুলে মুখ এবং হাত বেঁধে ফেলা হয়। পরে অস্ত্রের মুখে বাসের চালক ও হেলপারকে জিম্মি করা হয়। টাঙ্গাইলের গোড়াই এলাকা থেকে বাসটিকে ইউর্টান করে এলেঙ্গা হয়ে ময়মনসিংহ রোড ধরে যেতে থাকে। এই সময়ের মধ্যে যাত্রীদের কাছে থাকা মোবাইল, টাকা, কানের দুল, হাতের বালা, গলার চেইন লুট করে নেওয়া হয়। পরে ৫ থেকে ৬ জন ডাকাত দলবদ্ধভাবে গাড়িতে থাকা এক নারীকে ধর্ষণ করে।

এরপর রাত সাড়ে ৩টার দিকে টাঙ্গাইলের মধুপুর উপজেলার রক্তিপাড়া জামে মসজিদের পাশে বালুর ঢিবির কাছে বাসের গতি থামিয়ে খাদে ফেলে পালিয়ে যায়। পরে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ আসলে যাত্রীরা ডাকাতি ও নির্যাতনের বিষয়টি জানান। এ ঘটনায় ওই বাসের যাত্রী হেকমত মিয়া বাদী হয়ে মধুপুর থানায় বাস ডাকাতি ও ধর্ষণের মামলা দায়ের করেন।

সংবাদটি শেয়ার করুন

শেয়ার করে  সঙ্গে থাকুন, আপনার অশুভ মতামতের জন্য সম্পাদক দায়ী নয়।


Leave a Reply

Your email address will not be published.


আরও পড়ুন