কোটি কোটি ডলার ‘লুট’ করার অভিযোগ
এফবিআইয়ের ‘টেন মোস্ট ওয়ান্টেড’ তালিকায় একমাত্র নারী
২০১৭ সালের অক্টোবরে আচমকাই গায়েব হয়ে যান ‘ক্রিপ্টোকুইন’। তারপর থেকে হন্যে হয়ে খুঁজেও তাকে ধরতে পারেনি এফবিআই। তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানাও জারি করেছে আমেরিকার গোয়েন্দা সংস্থাটি।এফবিআইয়ের মোস্ট ওয়ান্টেড ১০ জন অপরাধীর তালিকায় ঢুকে পড়েছেন তিনি। কে এই ‘ক্রিপ্টোকুইন’?
এফবিআইয়ের খাতায় ‘ক্রিপ্টোকুইন’ নামে পরিচিত এই মহিলার পোশাকি নাম রুজা ইগনাতোভা। বুলগেরিয়ার পাশাপাশি জার্মানিরও নাগরিক রুজার বিরুদ্ধে কোটি কোটি ডলার ‘লুট’ করার অভিযোগ তুলেছে এফবিআই। তার সম্পর্কে কেউ কোনও তথ্য দিতে পারলে এক লক্ষ ডলারের পুরস্কারও ঘোষণা করেছে তারা। ভারতীয় মুদ্রায় যার মূল্য ৭৯ লাখ টাকার বেশি।
এফবিআইয়ের পাশাপাশি ইউরোপীয় গোয়েন্দাদের নজরে রয়েছেন রুজা। মে মাসে তাকে মোস্ট ওয়ান্টেড তালিকাভুক্ত করে ইউরোপোল। সঙ্গে গ্রেপ্তারিতে সাহায্য হয়, এমন তথ্য দিতে পারলে চার লাখ ডলারেরও বেশি পুরস্কারমূল্যের ঘোষণা করে। তবে ইউরোপ হোক বা আমেরিকা, কোনও দেশের গোয়েন্দারাই রুজাকে পাকড়াও করতে পারেননি।আমেরিকার গোয়েন্দাদের দাবি, ২০০৫ সালে জার্মানির একটি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রাইভেট ইন্টারন্যাশনাল ল’ নিয়ে পিএইচডি ডিগ্রি লাভ করেন রুজা। যদিও অনেকের দাবি, অক্সফোর্ড থেকে পিএইচডি ডিগ্রি রয়েছে তার। উচ্চশিক্ষা শেষে ম্যাকিনসে-র মতো বহুজাতিক সংস্থায় নাকি চাকরিও করেছেন।এক কালে উরসুলায় একটি সালোঁতে বিনিয়োগও করেছিলেন রুজা। সেটা ছিল ২০১১ সালে নভেম্বর।
রুজার অপরাধের কাহিনি প্রথম প্রকাশ্যে আসে ২০১২ সালে। সঙ্গে ছিলেন তার বাবা প্লামেন ইগনাতোভও। সে বছর জার্মানির একটি সংস্থার অধিগ্রহণের মামলায় প্রতারণার অভিযোগে দু’জনকেই দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছিল। ওই মামলায় ১৪ মাসের কারাবাসের সাজা হয়েছিল রুজার।জেলে থাকাকালীনই সম্ভবত অপরাধজগতে পাকাপাকি ভাবে প্রবেশ করে ফেলেছিলেন রুজা। ২০১৩ সালে বিগকয়েন নামে একটি ক্রিপ্টোকারেন্সির মার্কেটিং সংক্রান্ত প্রতারণায় জড়িত ছিলেন বলে অভিযোগ ওঠে তার বিরুদ্ধে।
এফবিআইয়ের দাবি, ২০১৪ সাল থেকে লোকঠকানোর ব্যবসা ও জি স্কিমের কারবারে ঢুকে পড়েন রুজা। সে বছরের অক্টোবরে ওয়ানকয়েন নামে ক্রিপ্টোকারেন্সির শুরু করেন বলে অভিযোগ। গোয়েন্দাদের দাবি, বিশ্ব জুড়ে সে কারবারের জাল ছড়াতে ইউটিউব-সহ একাধিক নেটমাধ্যমের সাহায্য নিয়েছিলেন রুজা।স্মার্ট, ঝকঝকে চেহারার উচ্চশিক্ষিত রুজার কথায় অনেকেই নাকি ওয়ানকয়েনে বিপুল বিনিয়োগ করেছেন। এমনই জানিয়েছেন এফবিআইয়ের গোয়েন্দারা। যদিও এফবিআইয়ের মতে, ওয়ানকয়েন নামের ক্রিপ্টোকারেন্সির (ইন্টারনেটের মাধ্যমে লেনদেনের ডিজিটাল মুদ্রা) আসলে শেয়ারবাজারে কোনও মূল্যই ছিল না। এমনকি, ইন্টারনেটের মাধ্যমে ব্লকচেন নামে যে আন্তর্জাল ভিত্তিক প্ল্যাটফর্মে বিনিয়োগ হয় এবং যার মাধ্যমে গেলে বিনিয়োগ সুরক্ষিত থাকে, সেই সুরক্ষাও ছিল না ওয়ানকয়েনের।
Leave a Reply