উচ্ছেদ অভিযানে ভবন ধসে ম্যাজিস্ট্রেট আহত
টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে উচ্ছেদ অভিযান চলাকালে ভবন ধসে কর্তব্যরত ম্যাজিস্ট্রেট আহত হয়েছেন।
মঙ্গলবার (১৮ জানুয়ারি) দুপুরে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের সাটিয়াচড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। আহত সড়ক ও জনপথ (সওজ) অধিদপ্তরের ম্যাজিস্ট্রেট আব্দুল লতিফ খান টাঙ্গাইলের ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন। তিনি ডান পায়ে ব্যথা পেয়েছেন বলে জানা গেছে।
এদিকে অভিযানে বাধা দেওয়ার অভিযোগে ভবন মালিক শাজাহানকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তিনি জামুর্কী ইউনিয়নের গোড়ান গ্রামের শুকুর মাহমুদের ছেলে।
টাঙ্গাইল সড়ক ও জনপথ বিভাগ সূত্র জানায়, জয়দেবপুর-চন্দ্রা-টাঙ্গাইল-এলেঙ্গা পর্যন্ত ৭০ কিলোমিটার দীর্ঘ এ মহাসড়কটি প্রথমে চার লেনে উন্নীত করার প্রকল্পটি ২০১৩ সালে একনেক সভায় অনুমোদিত হয়। ২০১৬ সালে এর কাজ শুরু হয়। মহাসড়কে ১৩টি আন্ডারপাস ও সাতটি ফ্লাইওভার রয়েছে। এটি প্রথমে চার লেনে উন্নীত করার কথা থাকলেও পরে ছয় লেনের কাজের অনুমোদন দেওয়া হয়।
বর্তমানে চার প্যাকেজে সড়কের নির্মাণকাজ চলছে। প্রতিটি প্যাকেজের জন্য আলাদা আলাদা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। এজন্য রাস্তার পাশের জমি অধিগ্রহণ করা হয়। দ্বিতীয় দফায় প্রায় পাঁচ বছর আগে মহাসড়কের পাশে সার্ভিস লেন করতে সরকার বিভিন্ন জায়গায় অধিগ্রহণ শুরু করে। সুযোগ বুঝে ওই এলাকায় পার্শ্ববর্তী গোড়ান গ্রামের শাহ মো. শাজাহান নামে এক ব্যক্তি একটি তিনতলা ও একটি দোতলা ভবন করেন।
মঙ্গলবার সকালে অবৈধভাবে গড়ে তোলা ভবন দুটি উচ্ছেদে অভিযান পরিচালনা করেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। এতে নেতৃত্ব দেন সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের স্টেট ও আইন কর্মকর্তা নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আব্দুল লতিফ খান। এ সময় বাধা দেন ভবনের মালিক শাজাহান। এ ঘটনায় তাকে আটক করা হয়।
এদিকে ভবনে এস্কেভেটরের ছোঁয়া দিতেই মুহূর্তেই ধসে পড়ে। এ সময় ভবনের কংক্রিটের বড় টুকরো নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আব্দুল লতিফ খানের পায়ের ওপর পড়লে তিনি আহত হন। ভবনের ছাদ পার্শ্ববর্তী পল্লী বিদ্যুতের সঞ্চালন লাইনের খুঁটির ওপর পড়লে তা হেলে পড়ে। একই সঙ্গে বিদ্যুতের তার ছিঁড়ে যায়। এতে আশেপাশের এলাকায় বিদ্যুৎ-সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়।
তবে শাজাহানের মেয়ে শামীমা আক্তার ও ছেলে শাহ মো. সাইফুল ইসলামের দাবি, তাদের বাবা নিজেদের জায়গায় ভবন করেছেন। সরকার থেকে বলা হচ্ছে জায়গাগুলো অধিগ্রহণ করা। কিন্তু তারা অধিগ্রহণের কোনো টাকা তুলেননি। ভবনটি উচ্ছেদের জন্য তাদের কোনো চিঠিও দেওয়া হয়নি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আব্দুল লতিফ খান বলেন, ব্যক্তি শাজাহান ফলস বিল্ডিং করে রেখেছে, তা আমাদের জানা ছিল না। আমাদের কর্মীরা যখন উচ্ছেদ করতে গেলো, তখন তা সঙ্গে সঙ্গে পড়ে গেলো। আমি কিছুটা আগাত পেয়েছি। আল্লাহর রহমতে বাকিদের কিছু হয়নি। ভবন দুটির মধ্যে একটি আগের একোয়ার করা জায়গায়। আর তিনতলা ভবনটি নতুন ভাবে একোয়ার করার জায়গায় নির্মাণ করা হয়েছে। ভবন দুটি আমাদের জায়গায় করা।
এ বিষয়ে মির্জাপুর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) গিয়াস উদ্দিন বলেন, উচ্ছেদ অভিযানে বাধা দেওয়ায় সওজ এর উপ-সহকারী প্রকৌশলী শহিদুল ইসলাম বাদী হয়ে মির্জাপুর থানায় মামলা করেছেন। এ ঘটনায় ভবনের মালিককে গ্রেফতার করা হয়েছে।
Leave a Reply