৫ ফেব্রুয়ারি জাতীয় গ্রন্থাগার দিবস

অথর
কুষ্টিয়া প্রেস ডেক্স :  কুষ্টিয়া, বাংলাদেশ
প্রকাশিত :৪ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ৭:১১ পূর্বাহ্ণ
৫ ফেব্রুয়ারি জাতীয় গ্রন্থাগার দিবস

৫ ফেব্রুয়ারি জাতীয় গ্রন্থাগার দিবস। জনগণকে গ্রন্থাগারমুখী করা, পাঠাভ্যাস বৃদ্ধি, মননশীল সমাজ গঠনের কেন্দ্রবিন্দু ও জনগণের বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে লাইব্রেরির ভূমিকাকে দৃঢ় করাই এ দিবসের লক্ষ্য। জনসাধারণের মধ্যে মানবিক মূল্যবোধের বিকাশ গ্রন্থাগারের মূল উদ্দেশ্য।

২০১৭ সালের ৩০ অক্টোবর মন্ত্রিসভার সিদ্ধান্তে এ দিনটিকে জাতীয় গ্রন্থাগার দিবস হিসেবে স্বীকৃতি দেয়া হয়। ২০১৮ সালে দেশে দিবসটি প্রথম পালিত হয়।

জাতীয় গ্রন্থাগার দিবস হিসেবে পালনের জন্য ৫ ফেব্রুয়ারি নির্ধারণ করার কারণ হলো- ১৯৫৪ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি জাতীয় গ্রন্থাগারের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়। এর অন্য একটি কারণ হলো- ফেব্রুয়ারি মাসে বই নিয়ে দেশে বেশ আলোচনা হয়। একুশে বইমেলা, একুশে ফেব্রুয়ারি, এগুলোর সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে দিবসটি পালনের সিদ্ধান্ত নেয় সরকার।

৫ ফেব্রুয়ারি জাতীয় গ্রন্থ দিবস উপলক্ষে আয়োজন করা হয়েছে নানাবিধ আয়োজন। বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা গড়ার লক্ষ্যে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় ব্যাপক কার্যক্রম গ্রহণ করেছে। সোনার বাংলা গড়তে প্রয়োজন জ্ঞানভিত্তিক আলোকিত সমাজ। লাইব্রেরি সে ভূমিকা পালন করছে। এ উপলক্ষে আগামীকাল শনিবার গ্রন্থাগার দিবসটি যথাযথভাবে পালন করা হবে। জ্ঞানভিত্তিক আলোকিত সমাজ গড়ার প্রত্যয়ে জাতীয় গ্রন্থাগার নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে।

বই হোক সময়ের সঙ্গী। আপনার পছন্দের বই পড়ুন, বই আপনার চলার পথে অনেক সমস্যার সমাধানও হতে পরে।
বই কেন পড়বেন জেনে নিনঃ-
১. জ্ঞানের ভান্ডার বইঃ- জ্ঞানের ভান্ডার বৃদ্ধি করতে বইয়ের কোনো বিকল্প নেই। জ্ঞানের পরিধি অসীম। যত বই পড়ব, আমাদের জ্ঞান তত বৃদ্ধি পাবে।
২. বই ভাবনার জগৎকে প্রসারিত করেঃ- বই পড়া মানে নানান বিষয় সম্পর্কে জানা। মানুষের মননশীল, চিন্তাশীল, সৃষ্টিশীল যাবতীয় ভাবনার সূচনা ঘটে বই পড়ার মাধ্যমে।
৩. লেখার দক্ষতা বাড়ায়ঃ- যত বেশি বই পড়ব, আমাদের ভাষাগত জ্ঞান, শব্দভান্ডার তত বৃদ্ধি পাবে। সেই সঙ্গে লেখার দক্ষতাও বাড়বে।
৪. মানসিক প্রশান্তি আনেঃ- নিজের পছন্দের বই পড়লে মানসিকভাবে অনেক প্রশান্তি পাওয়া যায়। মানসিক সমস্যায় ভুক্তভোগীদের ক্ষেত্রেও মানসিক শক্তি বৃদ্ধিমূলক বই খুব উপকারী।
৫. জীবনের লক্ষ্য নির্ধারণে সাহায্য করেঃ- বই আমাদের বিশ্বের সফল মানুষ সম্পর্কে জানায়। বইয়ের মধ্যে গুণীজনদের জীবনের সফলতা-ব্যর্থতার কথা জানা যায়, যা জীবনের লক্ষ্য নির্ধারণে সাহায্য করে।
৬. জীবনে ধনী হতে সহায়তা করেঃ- যে যত বেশি জ্ঞানী, সে তত বেশি ধনী। আবার অন্যদিকে বিশ্বে যাঁরা ধনী হয়েছেন প্রত্যেকেই বইপ্রেমী ছিলেন। বারাক ওবামা, বিল গেটস, মার্ক জাকারবার্গ প্রত্যেকেই প্রচুর বই পড়েন।
৭. বই আমাদের তথ্য, উপাত্ত ও জ্ঞান দেয়ঃ- বই পড়ে বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে নানা ধরনের তথ্য, উপাত্ত পাওয়া যায়।
৮. ভালো বন্ধুর ভূমিকা পালন করে বইঃ- যখন আপনি নিজেকে একা এবং অসহায় মনে করবেন, তখনই বই পড়া শুরু করুন। খুব শিগগির এটা আপনার সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপন করবে। আপনি যদি দুঃখী হন, বই আপনাকে আনন্দ দেবে, সঙ্গ দেবে।
৯. মস্তিষ্কের সক্ষমতা বৃদ্ধিঃ- শরীরের অন্যান্য অংশের মতোই মস্তিষ্কের ব্যায়ামের প্রয়োজন রয়েছে। বই পড়লে মস্তিষ্ক ভালো থাকে।
১০. মনুষ্যত্ব জাগ্রত করার সিঁড়িঃ- বই মানুষের মানবতা ও মনুষ্যত্ব জাগ্রত করে। প্রকৃত মানুষ হিসেবে গড়ে তোলে।
১১. বই আত্মার ওষুধঃ- ‘আত্মার ওষুধ’ এ কথাটি গ্রিসের থিবসের লাইব্রেরির দরজায় খোদাই করা আছে। তারা বিশ্বাস করে বই হলো আত্মার চিকিৎসার প্রধান উপকরণ।
১২. রক্তচাপ কমায়ঃ- গবেষণায় দেখা গেছে, কিছু কিছু বই পড়লে অনেকটা রক্তচাপ কমে যায়।
১৩. জ্ঞানের দ্যুতি বাড়ায়ঃ- বই পাঠকের জ্ঞানের দ্যুতি বাড়ায়। সেই দ্যুতি একজন পাঠককে আলোকিত করে। একই সঙ্গে আলোকিত করে পুরো জাতিকে।
১৪. শব্দভান্ডার সমৃদ্ধ করেঃ- শুধু পাঠ্যবই পড়ে শব্দভান্ডার বৃদ্ধি করা সম্ভব নয়। যখন আমরা দেশি-বিদেশি নানা ধরনের বই পড়ব, তখনই আমাদের শব্দভান্ডার বৃদ্ধি পাবে।
১৫. স্মরণশক্তি বাড়ায়ঃ- যখন আমরা একটি বই পড়ি তখন বইটির মূল উদ্দেশ্যসহ বিভিন্ন বিষয় মনে রাখতে হয়। এ ক্ষেত্রে প্রচুর ব্রেইন ওয়ার্ক হয়; যা স্মরণশক্তি বাড়াতে সহায়তা করে।
১৬. মানসিক চাপ কমায়ঃ- প্রাত্যহিক জীবনের যেকোনো ধরনের মানসিক চাপকে পাশ কাটিয়ে যেতে একটা ভালো বই পড়াই যথেষ্ট।
১৭. বিনোদনের মাধ্যমঃ- বই শুধু জ্ঞান অর্জন বা তথ্য আহরণের উপায় নয়। একই সাথে বই বিনোদনও প্রদান করে। পাঠকের অনুভূতি নিয়ে দারুণভাবে খেলা করে বই।
১৮. বইয়ের নির্যাস আছেঃ- বইয়ের একটা নিজস্ব নির্যাস আছে। পাতার একটা গন্ধ আছে। যেটা পাঠককে আচ্ছন্ন করে। বিভিন্ন ব্লগ, সাইট, অ্যাপসে লেখা পড়ে প্রকৃত বইয়ের নির্যাসটা পাওয়া যায় না।
১৯. সৃজনশীলতা বৃদ্ধি পায়ঃ- বই পড়লে মানুষের সৃজনশীলতা বৃদ্ধি পায়। সৃজনশীল কিছু করার আগ্রহ জন্মে।
২০. বিশ্লেষণধর্মী কল্পনাশক্তি বৃদ্ধিঃ- একটা বই পড়তে পড়তে অনেক সময় পাঠক তার মতো করে ভাবতে থাকে কিংবা নিজেই রহস্যটা উন্মোচন করে ফেলে; যা পাঠকের বিশ্লেষণধর্মী চিন্তাক্ষমতা বৃদ্ধি করে।
২১. ব্যক্তিজীবন উন্নত করেঃ- ব্যক্তিজীবনের উন্নতি শুরুই হয় বই পড়া থেকে। নতুন বিষয় সম্পর্কে জানা, কোনো সমস্যার নতুন সমাধান পাওয়া যায় বই থেকে।
২২. ব্যক্তিত্ব গঠনে বইঃ- নিজের একটা পরিচয় ও ব্যক্তিত্ব গঠনে বই পড়ার বিকল্প নেই। নিজেকে তৈরি করতে পূর্বের ও বর্তমানের বিষয়ভিত্তিক মতামত জানতে বই পড়া আবশ্যক।
২৩. কর্ম জীবনে সহায়কঃ- কর্ম জীবনে বই সহায়কের ভূমিকা পালন করে। ব্যবসা বা চাকুরী জীবনে বই হাতিয়ার হিসেবে সহায়ক হয়।
২৪. অবসরের সঙ্গী বইঃ- বই অবসরের সঙ্গী একথা সবাই বলে থাকেন। নিজের ভালবাসা ও পছন্দের বইটি অবসরে আনেকেই পড়েন। এটা পড়ার পরেও যেন বইটি পাঠকের পিপাসু মনকে আত্মতৃপ্তি দেয়।

সংবাদটি শেয়ার করুন

শেয়ার করে  সঙ্গে থাকুন, আপনার অশুভ মতামতের জন্য সম্পাদক দায়ী নয়।


Leave a Reply

Your email address will not be published.