রাজশাহীতে ‘আওয়ামী’ শব্দের অর্থ বিকৃত করে ফেসবুকে পোস্ট দেওয়ার অভিযোগে তরুণের ১০ বছরের কারাদণ্ড ও জরিমানা
আওয়ামী লীগের ‘আওয়ামী’ শব্দের অর্থ বিকৃত করে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেওয়ার অভিযোগে এক তরুণকে ১০ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন রাজশাহীর একটি আদালত। এক আওয়ামী লীগ নেতার করা তথ্যপ্রযুক্তি আইনের ৫৭ ধারার এই মামলার রায়ে একই সঙ্গে ওই যুবককে ১০ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। অনাদায়ে আরও এক বছরের কারাদণ্ডের আদেশ দেওয়া হয়েছে। সোমবার দুপুরে রাজশাহী সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. জিয়াউর রহমান এ রায় ঘোষণা করেছেন।
দণ্ডপ্রাপ্ত তরুণের নাম আবদুল মুকিত ওরফে রাজু (২৬)। তিনি রাজশাহীর পবা উপজেলার হরিপুর গ্রামের রিয়াজুল ইসলামের ছেলে। ২০১৭ সালে মামলাটি করেছিলেন হরিপুর ইউনিয়নের আওয়ামী লীগের সভাপতি সাইদুর রহমান। মুকিত হরিপুর ইউনিয়ন ছাত্রশিবিরের সভাপতি বলে দাবি সাইদুর রহমানের।
মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, ২০১৭ সালের ২৭ মে আবদুল মুকিত তার ফেসবুক আইডিতে আওয়ামী লীগকে ব্যঙ্গ করে বাবা ও ছেলের কথোপকথনের ঢঙে একটি কৌতুক পোস্ট করেন।
মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, ২০১৭ সালের ২৭ মে আবদুল মুকিত তাঁর ফেসবুক আইডিতে আওয়ামী লীগকে ব্যঙ্গ করে বাবা ও ছেলের কথোপকথনের ঢঙে একটি কৌতুক পোস্ট করেন।
সেখানে তিনি উল্লেখ করেন, আওয়ামী শব্দটি আইয়াম শব্দ থেকে এসেছে। যার অর্থ অন্ধকার, কুসংস্কার আর লীগ অর্থ দল। অর্থাৎ আওয়ামী লীগ মানে অন্ধকারের দল। সেখানে ইসলাম ও আওয়ামী শব্দটি নিয়ে সাংঘর্ষিক অবস্থানে এনে উসকানি দেওয়া হয়েছে বলেও উল্লেখ করা হয়।
এই মামলার রায়ের পর্যবেক্ষণে একটি জায়গায় বিচারক বলেছেন, কৌতুকের নামে যে পোস্ট করা হয়েছে, সেই পোস্টের মাধ্যমে পরিকল্পিতভাবে মিথ্যাচার করা হয়েছে। ঘৃণার বিষবাষ্প ছড়ানো হয়েছে, ইতিহাস বিকৃত করা হয়েছে, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্টে উসকানি দেওয়া হয়েছে।
পোস্টে বলা হয়েছে, আওয়ামী লীগের নাম নেওয়া পাপ, এটা গজবের নাম। ইসলামের নামে গল্প ফেঁদে পোস্টদাতা ঘৃণার বিষবাষ্প ছড়িয়েছেন। তারপর বলছেন, আওয়ামী শব্দটি এসেছে আইয়াম শব্দ থেকে। যার অর্থ বলা হয়েছে অন্ধকার, কুসংস্কার। বলা হয়েছে, আওয়ামী লীগ মানে অন্ধকারের দল। কিন্তু তথ্যমতে, উর্দু আওয়াম শব্দ থেকে আওয়ামী লীগ শব্দটি এসেছে। আর উর্দু আওয়াম শব্দের অর্থ জনতা। পোস্টদাতা এখানে মিথ্যাচারের আশ্রয় নিয়েছেন।
আদালতের রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী মোসা. ইসমত আরা বেগম বলেন, মামলার বিচার চলাকালে আদালত আটজনের সাক্ষ্য গ্রহণ করেছেন। এরপর এ রায় ঘোষণা করলেন আদালত। রায় ঘোষণার সময় আসামি আদালতের কাঠগড়ায় হাজির ছিলেন। তাঁকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
Leave a Reply